তারিখ : ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

নওগাঁয় দিন দিন জমে উঠেছে আখের বাজার

নওগাঁয় দিন দিন আখের চাষ কমলেও জমে উঠেছে আখের বাজার
[ভালুকা ডট কম : ০১ আগস্ট]
নওগাঁর রাণীনগরে জমে উঠেছে আখের বাজার। প্রতিদিনই এই বাজার থেকে দেশী জাতের আখ কিনে রাণীনগর ও তার আশেপাশের অঞ্চলগুলোতে বিক্রি করছেন খুচরা ও পাইকারী ব্যবসায়ীরা। আর রাণীনগর উপজেলায় উৎপাদিত দেশী জাতের (আঁচাফারাম জাত) আখের চাহিদা অনেকটাই বেশি।

কারণ এই জাতের আখ শুধুমাত্র রাণীনগর ও তার আশেপাশের অঞ্চলেই চাষ হয়ে থাকে। অন্যান্য আখের চেয়ে বেশি মিষ্টি। এছাড়া বর্তমান সময় আখের মৌসুম হওয়ায় বিভিন্ন স্থানে ফেরি করেও আখ বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া ভ্রাম্যমাণ ভ্যান গাড়িতে মেশিনের মাধ্যমে বের করা আখের রসের চাহিদাতো রয়েছে। গরম মৌসুমে এর চাহিদা বেড়ে যায়। মেশিন দিয়ে বের করা প্রতি গ্লাস আখের রস ১০টাকা করে বিক্রি হয়।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১০হেক্টর জমিতে আখের চাষ করা হয়েছে। উপজেলার বাহাদুরপুর, চকমনু, চকাদিন, ত্রিমোহনীসহ বেশ কিছু গ্রাম একসময় আখ চাষের গ্রাম হিসেবে পরিচিত ছিলো। বর্তমানে এই গ্রামগুলোতে হাতে গোনা কয়েকজন চাষীরা আখের আবাদ ধরে রেখেছেন। তবে প্রতি বছরই এই পরিমাণ কমছে। আখের জমিতে বিকল্প আবাদ হিসেবে অধিক লাভজনক ফসলের বাগান তৈরি করা, আখের জমিতে লাভজনক ভুট্টার আবাদের পরিমাণ বেশি হওয়াসহ বিভিন্ন কারণে উপজেলায় আখের চাষ কমছে। এছাড়া আখ চাষে খরচ বেশি হওয়ার কারণে বাজারে বেশি দামে আখ বিক্রি করার কারণে ক্রেতার সংখ্যাও কমে যাচ্ছে যার কারণে আখের চাষও কমে যাচ্ছে।

উপজেলার চকমুনু গ্রামের আখ চাষি মুহাম্মদ রবিউল আলম বলেন, এবার আখের ফলন ভালো হয়েছে। আমি ৩বিঘা জমিতে আখের চাষ করেছি। আমি ইতিমধ্যেই ৪০হাজার টাকার আখ বিক্রি করেছি, খেতের সব আখ বিক্রি করে আরও অন্তত ৪০হাজার টাকা পাওয়া যাবে। তবে গত বছর আখে পোকার আক্রমণ বেশি হওয়ার কারণে আমরা আখচাষীরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিলাম।

তিনি আরো বলেন, আমরা খেত থেকে আখ তুলে উপজেলার রেলগেট সংলগ্ন আখের বাজারে নিয়ে যাই। আবার অনেক সময় খুচরা ব্যবসায়ীরা খেতে থেকেই আকার অনুযায়ী আখ কিনে নিচ্ছেন। তবে কৃষি অফিস থেকে যদি আখ চাষে আরো সহযোগিতা পাওয়া যেতো তাহলে আখ চাষ কমতো না। কারণ এটি অত্যন্ত লাভজনক আবাদ। কারণ আখের সবকিছুই ব্যবহারযোগ্য।

উপজেলার ত্রিমোহনী হাটের খুচরা আখ বিক্রেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, খেত থেকে তোলা প্রতিটি আখ অনুমান করে দরদাম করা হয়। এরপর সেই আকারের আখ আলাদা করে গাড়িতে করে বাজারে নেওয়া হয়। আখ বিক্রি একটি মৌসুম ভিত্তিক ব্যবসা। ভালো মানের প্রতিটি আখ খুচরা ২৫-৩০টাকা করে বিক্রি করি। এছাড়াও অন্যান্য দামেরও আখ রয়েছে। তবে বর্তমানে বাজারে প্রতিটি পণ্যের দাম বেশি হওয়ার কারণে আখেরও দাম আগের তুলনায় অনেক বেশি হয়েছে। তারপরও আখ বিক্রি করে লাভ ভালো হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কেএইচএম ইফতেখারুল আলম খাঁন বলেন, আখের রস মানব শরীরের জন্য অনেক উপকারী। আখের রসের ১২টি গুনাগুন ও উপকারিতা রয়েছে। বিশেষ করে আখ মেশিন দিয়ে রস করে না খেয়ে মুখের মাধ্যমে আখের ছাল ছেড়ে রস খাওয়াটা অনেক উপকারী। কারণ মুখের মাধ্যমে আখের ছাঁল ছেড়ে রস খেলে দাঁত ও মুখ অনেক পরিস্কার হয়। আখের রস জন্ডিসসহ বেশি কিছু রোগের প্রতিষেধক হিসেবেও কাজ করে। তাই আখের মৌসুমে আমাদের প্রত্যককেই প্রতিদিনই আখের রস খাওয়া প্রয়োজন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহীদুল ইসলাম বলেন, আখ চাষ পুরোটাই লাভজনক। আখের পাতা গবাদিপশুর জন্য স্বাস্থ্য সম্মত উন্নত মানের খাদ্য, আখের ছাঁল শুকানোর পর জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করা যায়, সীমিত পরিমাণ সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়, জমিতে আখ চাষ করলে সেই জমির উর্বরতা শক্তিও বৃদ্ধি পায়। এককথায় আখ চাষ অত্যন্ত লাভজনক একটি ফসল। কিন্তু বিগত কয়েক বছর আখে পোকার আক্রমণ বেশি হওয়ায় ও কাঙ্খিত দাম না পাওয়ায় আখের চাষ চলতি মৌসুমে কিছুটা কমেছে। তবে আখ চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে কৃষি অফিসের কর্মকান্ড অব্যাহত রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, চলতি বছর আবহাওয়া আখ চাষের অনুক’লে থাকায়, দক্ষতা, পরিচর্যা, সঠিকভাবে সার ও কীটনাশক প্রয়োগের কারণে এবার উপজেলায় আখের ফলন ভালো হয়েছে। কৃষকরা বাজারে আখের দাম ভালো পাচ্ছেন। আমি আশাবাদি আগামীবছর উপজেলায় আখের চাষ আরো বৃদ্ধি পাবে।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

কৃষি/শিল্প বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই