তারিখ : ০২ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

ভালুকা উপজেলা নির্বাচনে হবে আ’লীগ,বিএনপির হাড্ডাহাড্ডি লড়াই

ভালুকা উপজেলা নির্বাচনে হবে আ’লীগ,বিএনপির হাড্ডাহাড্ডি লড়াই
[ভালুকা ডট কম : ১৮ ফেব্রুয়ারী]
আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারী ভালুকা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ নির্বাচনে ভালুকায় আ’লীগ প্রার্থী গোলাম মোস্তফা (দোয়াত কলম) ও বিএনপির প্রার্থী মোর্শেদ আলম (আনারস) এর মাঝে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।

তৃণমুলের ভোটে উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা প্রার্থী হলেও আ’লীগের একটি বৃহৎ অংশ তিনি যাতে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত না হতে পারেন সে জন্য গোপনে তার বিপক্ষে কাজ করে যাচ্ছে। অপর দিকে বিএনপির তৃণ মুলের প্রার্থী হিসাবে খালেকুজ্জামান হুমায়ুন তালুকদারকে মনোনয়ন দেয়া হয়। অপর দিকে ময়মনসিংহ জেলা বিএনপির যুগ্ন সম্পাদক মুহাম্মদ মোর্শেদ আলম ও বিএনপি থেকে মনোনয়ন পত্র দাখিল করেন। কিন্তু পরবর্তীতে বিএনপির তৃণমূলের প্রার্থী খালেকুজ্জামান হুমায়ুন তালুকদার স্থানীয় বিএনপির নীতি নির্ধারকদের সাথে কোন প্রকার পরামর্শ ছাড়াই অজ্ঞাত কারণে তিনি তাঁর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন।

এতে উপজেলা  বিএনপির সভাপতি ফখর উদ্দিন আহাম্মেদ বাচ্চুর গ্রুপটি চরম ভাবে হতাশা গ্রস্থ হয়ে পড়ে। কারণ তাদের মনোনিত প্রার্থী দলীয় সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে তার মনোনয়পত্র প্রত্যাহার করায় বাধ্য হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বি  গ্রুপের প্রধান মুহাম্মদ মোর্শেদ আলমকে নির্বাচনে সমর্থন দিতে হচ্ছে। এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত বিএনপির মাঝে অন্তঃদ্বন্দ্ব বিরাজ  করছে। বাচ্চু গ্রুপের লোকজন মানসিক ভাবে মোর্শেদ আলমকে মেনে নিতে পারছে না। তারপরও আ’লীগের প্রার্থীকে ঠেকাতে এ নির্বাচনে যোগ্য প্রার্থী হিসাবে বিএনপি থেকে মোর্শেদ আলমের কোন বিকল্প কেউ ছিল না।

অপর দিকে আ’লীগ থেকে তৃণ মুলের ভোটে প্রার্থী হয়েছেন গোলাম মোস্তফা মনোনয়ন পেয়েছেন। দলীয় মনোনয়নের জন্য চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কাজিম উদ্দিন আহাম্মেদ ধনু ও ইঞ্জিনিয়ার মহি উদ্দিন। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তৃণমূলের ভোটে হেরে গিয়েও কাজিম উদ্দিন আহাম্মেদ ধনু বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করে ব্যাপক ভোটের ব্যবধানে গোলাম মোস্তফাকে পরাজিত করেন। দলীয় সিদ্ধান্ত না মেনে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করায় কাজিম উদ্দিন আহাম্মদ ধনুকে দল থেকে বহিস্কারও করা হয়ে ছিল। গত নির্বাচনে আ’লীগের দলীয় প্রার্থী গোলাম মোস্তফা তৃতীয় স্থানে ছিলেন।

ডা.এম আমান উল্লাহ এম,পি ও কাজিম উদ্দিন আহাম্মদ ধনু গ্রুপ যদি এ নির্বাচনে গোলাম  মোস্তফার পক্ষে কাজ করে তাহলে তিনি নির্বাচনে জয় হওয়ার সম্ভবনা রয়েছেন। এ নির্বাচনে যদি গোলাম মোস্তফা পরাজিত যায় তাহলে তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ধ্বংস হয়ে যাবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। তাই এবারের নির্বাচন তার ডু অর ডাইয়ের নির্বাচন। কারণ গত নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে তিনি বিদ্রোহী প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়েছে। এ নির্বাচনে যদি আবারও পরাজিত হয় তার রাজনৈতিক জীবনের শেষ বলতে কিছু থাকবে না।

বাচ্চু গ্রুপের ধারণা যদি এ নির্বাচনে মোর্শেদ উপজেলা চেয়ারম্যান হয়ে যায়,তাহলে আগামী সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন তিনি নিয়ে আসবেন। তাই বাচ্চু গ্রুপ চাচ্ছে নির্বাচনে মোর্শেদ আলমের পরাজয়। মোর্শেদ আলমের প্রার্থীতা চুড়ান্ত হওয়ার পর গত ১১ফেব্রুয়ারী দলীয় কার্যালয়ে উপস্থিত নেতা কর্মীদেরকে এ মর্মে আশ্বাস্ত করেন আগামী সংসদ নির্বাচনে বাচ্চুর পক্ষে তিনি কাজ করে দিবেন।

ফখর উদ্দিন আহমেদ বাচ্চু ভালুকার ভঙ্গুর দলকে অনেক কষ্টে পুনঃগঠিত করে প্রতিদ্বন্দ্বি আ’লীগের বিরোদ্ধে একটি শক্তিশালী দল হিসাবে আত্ন প্রকাশ করেছে। বিগত আন্দোলনের সময় ফখর উদ্দিন আহাম্মদ বাচ্চু রাজপথে থেকে আন্দোলন করায় তার বিরোদ্ধে ৬টি রাজনৈতিক মামলা হয়েছে। পক্ষান্তরে মোর্শেদ আলমের বিরোদ্ধে রাজনৈতিক কোন মামলা হয়নি।

অপর দিকে বিএনপির নির্বাহী কমিটি সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফখর উদ্দিন আহমেদ বাচ্চু বর্তমানে রাজনৈতিক মামলায় জেল হাজতে রয়েছে। তার গ্রুপ যদি মোর্শেদ আলমের পক্ষে  আন্তরিক ভাবে নির্বাচন করে দেয় তাহলে ফলাফল মোর্শেদ আলমের পক্ষে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।  গত ৩বছর যাবত মুহাম্মদ মোর্শেদ আলম উপজেলা বিভিন্ন মসজিদ,মাদরাসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মানসহ মোটা অংকের টাকা অনুদান দিয়েছেন। এ ছাড়াও হতদরিদ্র মানুষের চিকিৎসা সহ বিভিন্ন সময় প্রায় ৫কোটি টাকার শাড়ি,লুঙ্গি,কম্বল ও নগদ টাকা গরীব দুঃখিদের মাঝে দান করেন। ধারণা করা হচ্ছে,এসব দানপ্রাপ্ত হত দরিদ্র জনগণ যদি নির্দ্বিধায় ভোট দিতে পারে তাহলে মোর্শেদ আলম ব্যাপক ভোটের ব্যবধানে জয় লাভ করবেন।

নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে আ’লীগ থেকে সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম পিন্টু (টিউবওয়েল) ও বিএনপি থেকে তারিকুল ইসলাম তারু (তালা চাবি)। নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে আ’লীগ থেকে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মনিরা সুলতানা মনি (কলস) ও বিএনপি থেকে রাশিদা খাতুন (ফুটবল) প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চেয়ারম্যান পদে উভয় দলীয় মাঝে বিতর্ক থাকলেও ভাইস চেয়ারম্যান পদে কোন প্রকার দ্বিধা বিভক্তি নেই। উভয় দল থেকে তরুণ প্রার্থীদেরকে ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। দুটি পদে আ’লীগে প্রার্থীদ্বয় দলীয় ভোটের উপর নির্ভর করে তাদের বিজয় নিশ্চিত বলে আশা করছেন।

আর বিএনপির প্রার্থীদ্বয়ের দাবি করছেন, গত আ’লীগ শাসন আমলে সারাদেশের ন্যায় ভালুকাতেও আ’লীগের নেতা কর্মীরা ব্যাপক দুর্নীতি,জনগণের উপর নির্যাতন করায় আম জনগণ আ’লীগের প্রার্থীদেরকে প্রত্যাক্ষান করে তাদেরকে নির্বাচিত করবেন।

২৭ফেব্রুয়ারী কে বিজয়ের হাঁসি হাসবেন সে অপেক্ষায় রয়েছে ভালুকা উপজেলার জনগণ।



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

ভালুকা বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই