তারিখ : ০১ মে ২০২৪, বুধবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

ভালুকায় কোটি কোটি টাকা মূল্যের বনের জমি রেজিস্ট্রি

ভালুকায় কোটি কোটি টাকা মূল্যের বনের জমি রেজিস্ট্রি
[ভালুকা ডট কম : ১০ এপ্রিল]
ভালুকা উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রী অফিসে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের মধ্যদিয়ে চলছে দলিল রেজিস্ট্রেশনের কার্যক্রম। কতিপয় অসাধূ দলিল লেখক, ভূমি দালাল ও দুর্নীতি পরায়ন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমম্বয়ে গড়ে উঠা একটি সংঘবদ্ধ চক্রের কাছে জিম্মি হয়ে পরেছে দলিল করতে আসা নিরীহ ক্রেতা-বিক্রেতারা।

অপরদিকে উচ্চ মূল্যের জমি কম মূল্য দেখিয়ে এমনকি গেজেট ভূক্ত বন বিভাগের কোটি কোটি টাকা মূল্যের জমি রেজিস্ট্রির মাধ্যমে একটি চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। সম্প্রতি প্রায় ৫০ কোটি টাকা মূল্যের বনের গেজেভূক্ত ৪১বিঘা জমি ভূয়া কাগজে রেনেটা গ্রুপের নামে রেজিস্ট্রি করা হয়েছে। ফলে সরকার একদিকে যেমন হারাচ্ছে বিপুল পরিমান রাজস্ব তেমনি অপরদিকে বেহাত হচ্ছে সামাজিক বনায়ন সহ বিপুল পরিমান বন বিভাগের জমি। আর এসব অনিয়ম-দুর্নীতির সাথে সাব-রেজিস্ট্রার সংশিষ্ট রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগে জানা যায়, ভালুকার সাব-রেজিস্ট্রার গিয়াস উদ্দিন তার নিজ অফিসে বসে দলিল রেজিস্ট্রির চেয়ে কমিশনে দলিল করতেই বেশি আগ্রহী। একটি চক্র ভূমি অফিসের অসাধূ কর্মকর্তা কর্মচারীদের যোগসাজশে ভূমির ডিমারগেশন, জাল পর্চা ও খারিজ তৈরী করে রেজিস্ট্রারকে মোটা অংকের কমিশন দিয়ে বনভূমি ও খাস জমি রেজিস্ট্রি করে নিচ্ছে। এমনকি প্রতি বৃহস্পতিবার ছুটি নেয়ার নামে অন্যত্র বসে দলিল রেজিস্ট্রি করে সাব-রেজিস্ট্রার হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। তা ছাড়া সাধারণ যে সব দলিল রেজিস্ট্রি হচ্ছে তা থেকে সেরেস্তার নামে প্রতি লাখে ৫শত থেকে এক হাজার টাকা বাধ্যতামূলক আদায় করে নিচ্ছেন।

এ ব্যাপারে একাধিক দলিল লেখক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, দলিল রেজিস্ট্রি করতে গেলে প্রতি লাখে এক হাজার টাকা প্রথমেই রেজিস্ট্রারকে দিতে হয়। তা না হলে দলিল লেখকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণসহ লাইসেন্স বাতিলের হুমকী দিয়ে থাকে। অভিযোগে আরো জানা যায়, সাব-রেজিস্ট্রার টাকা হলেই কোন কাগজ-পত্র যাচাই বাছাই ছাড়াই দলিল রেজিস্ট্রি করে থাকেন। সম্প্রতি রেনেটা গ্রুপের সাথে সাবরেজিস্টারের একটি গোপন চুক্তি হয়। আর এই চুক্তির ফসল হিসেবে গত (২৪ মার্চ) উপজেলার ধামশুর মৌজার বনের গেজেটভূক্ত ১২১৭ দাগে ২৫৮২ নম্বর দলিলমূলে জনৈক হোছনে আরা ফিরোজ দাতা সেজে ৬৯ লাখ ৮৫ হাজার টাকা মূল্যের তিন বিঘা ১১ শতাংশ জমি রেনেটা গ্রুপের নামে রেজিস্ট্রি করে দেন।

একই তারিখে এবং একই দাগ ও মৌজায় কবির উদ্দিন সরকার ওরফে কবির দাতা সেজে ২৫৮৩ নম্বর দলিল মূলে একই মূল্যের সমপরিমান জমি রেনেটা গ্রুপের নামে রেজিস্ট্রি করে দেন। গত ২৩ মার্চ একই দাগে ২৫২৮ নং-দলিল মূলে তিন কোটি ১৫ লাখ টাকা মূল্যের ১৫ বিঘা জমি গোলাম মোস্তফা দাতা সেজে ওই কোম্পানীর নামে রেজিস্ট্রি করে দেন। ২৩ ও ২৯ ডিসেম্বর ২০১৩ইং তারিখে ধামশুর মৌজায় একই দাগে উক্ত গোলাম মোস্তফা ১০২৮৯ নং-ও ১১২০৪ নং-দলিল মূলে এক কোটি ২৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা মূল্যের ১৩ বিঘা জমি রেজিস্ট্রি করে দেন। গত (২৯ ডিসেম্বর) ২০১৩ইং তারিখে একই দাগ ও মৌজায় ১১২০৩ নং-দলিল মূলে শামছুদ্দিন খান নামের এক ব্যক্তি দাতা সেজে ৬২ লাখ ১৫ হাজার টাকা মূল্যে ৬ বিঘা ১১শতাংশ জমি ওই কোম্পানীর নামেই রেজিস্ট্রি করে দেন।

অপরদিকে ৬৮৮১ নং-দলিল মূলে হবিরবাড়ি মৌজার বন বিভাগের গেজেটভূক্ত ১১০ নং-দাগে ১৪ লাখ টাকা মূল্যের ১৪ একর ৭৫ শতাংশ জমি শামছুল ইসলাম(গং) দাতা সেজে বোরহান উদ্দিন(গং) দের নামে রেজিস্ট্রিসহ ইতোমধ্যে সাবরেজিস্ট্রার বিপুল পরিমান বন বিভাগের জমি রেজিস্ট্রি করে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ সকল দলিল রেজিস্ট্রির ব্যাপারে অভিযুক্ত সাব রেজিস্ট্রার গিয়াস উদ্দিন জানান,প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখেই দলিল গুলো রেজিস্ট্রি করা হয়েছে। তবে বনের জমি রেজিস্ট্রির বিষয়ে জানতে চাইলে তার কাছ থেকে কোন সদোত্তর পাওয়া যায়নি।

হবিরবাড়ি রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কাশেম জানান, বিষয়টি শুনে বিট কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামকে দলিলের নকল উত্তোলনের জন্য পাঠানো হয়েছে এবং দলিল গুলো হাতে পাওয়ার পর সাব-রেজিস্ট্রারসহ বনভূমি রেজিস্ট্রির সাথে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ময়মনসিংহ জেলা সহকারী বন সংরক্ষক মোঃ মঈন উদ্দিন জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: তরফদার সোহেল রহমান জানান,ধামশুর মৌজার ১২১৭ নং-দাগে আদৌ পর্যন্ত কোন নামজারি বা জমা খারিজ হয়নি।ভালুকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ছরোয়ার হোসেন জানান, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

ভালুকা বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই