তারিখ : ০২ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

ভালুকার যুবলীগ নেতা যুবরাজকে কেন জেএমবি ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেফতার করা হলো না ?

ভালুকার যুবলীগ নেতা যুবরাজকে কেন জেএমবি ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেফতার করা হলো না ?
[ভালুকা ডট কম : ০৩ মে]     
ত্রিশালের জেএমবি ছিনতাইয়ের অভিযোগে র‌্যাবের কাছে গ্রেফতারকৃত যুবলীগ নেতা কামাল হোসেন ওরফে সবুজের স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দি দেয়ার পরও ভালুকা উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন সম্পাদক আতাউর রহমান কামাল ওরফে যুবরাজ কে কেন আইন শৃংখলা বাহিনী গ্রেফতার করলো না এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেছে সাধারণ মানুষ।

গত ১৯এপ্রিল থেকে ভালুকা উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে ৭জনকে র‌্যাব গ্রেফতার করার পর গত ৩০এপ্রিল গণমধ্যমে প্রকাশ করা হয় র‌্যাব তাদেরকে গ্রেফতার করেছে। যেহেতু সবুজ গণমধ্যমের কাছে জবাব বন্দি দিয়েছে কামালের নির্দেশে তারা এ অভিযানে অংশগ্রহন করেছে তা হলে আইন শৃংখলা বাহিনী কেন যুবরাজকে গ্রেফতার করেনি। এ নিয়ে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হচ্ছে।

বুধবার ১মে গ্রেফতারকৃতদের পরিবার ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বললে তারা অনেকেই তাদেরকে নির্দোষ নিরপরাধ বলে দাবি করেন। তারা যে জেএমবির সাথে জড়িত না, অনেকই বিশ্বাস করতে পাচ্ছে না তাদের গ্রামে জেএমবি আছে। আবার কেউ বলছে র‌্যাব তো না জেনে না বুঝে তাদেরকে গ্রেফতারও করেনি। ভালুকা জোড়েই চলছে অপহরণ ও গ্রেফতার আতংক।

কামাল হোসেন সবুজ যুবলীগ নেতা গণজাগরণ টিউটিরিয়াল কোচিং সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান শিক্ষক গত ৩০এপ্রিল র‌্যাবের হেড কোয়ার্টারে গণমধ্যম কর্মীদেরকে সমানে এ মর্মে সাক্ষাৎকার দেয় “ভালুকা উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন সম্পাদক আতাউর রহমান কামাল ওরফে যুবরাজের নির্দেশে গত ২৩ ফেব্রুয়ারী ত্রিশালের সাইনবোর্ড এলাকায় রাস্তা ব্যারিকেড দিয়ে গুলি করে বোমা ফাটিয়ে জিএমবির ৩সদস্যকে ছিনতাই করে নিয়ে যায়। সেই অভিযানে তারা অংশগ্রহন করে এবং তাদেরকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করে” এদের মাঝে মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত ২জন ও যাবত জীবন সাজাপ্রাপ্ত একজন আসামী ছিল।

এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে গত এপ্রিল মাসে ঢাকা এবং  ভালুকার বিভিন্ন গ্রাম থেকে কামাল হোসেন সবুজ (৩৫),মো. সোহেল রানা (২৮), মোরশেদ আলম (২২), আনোয়ার হোসেন দুর্জয় (৪০), মো. বাছির উদ্দিন (২০), মো. ইউসুফ আলী সোহাগ (২০), মো. ইলিয়াস উদ্দিন (৩৪) ও আবু বকর সিদ্দিক স্বপন (২৭)।

কে এই যুবরাজ ঃ-তার নাম আতাউর রহমান কামাল প্রভাব প্রতিপত্তি খাটিনোর কারণে ও ক্ষমতার অপব্যবহার করায় এলাকার মানুষ তার নাম দিয়েছে “যুবরাজ”। তার পিতা মজিবুর রহমান উপজেলা আ’লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি,ভালুকা উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান। তার পিতা একজন নিম্নবিত্ত পবিরারের লোক তিনি ডাকাতিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য থেকে পরবর্তীতে ইউনিয়ন পরিষদের ৩বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান থেকে গত ২০০৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আ’লীগে প্রার্থী হিসাবে উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পিতা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর আতাউর রহমান কামাল ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঢাকায় ফ্লাট ও প্লট ক্রয়,ভালুকা জমি ক্রয় সহ তার পরিবারের লোকজনের নামে বেনামে বিভিন্ন ব্যাংকে কোটি কোটি টাকার ব্যাংক ব্যালেন্স রয়েছে।
 
তিনি টাকার জন্য এহেন কোন কাজ নেই যা তিনি করেন নি। ওই এলাকায় তার নেতৃত্বে গড়ে ওঠেছে সরকারী বনের জমি থেকে কাঠ চোরচক্র। এ চক্রটি বনের জমি দখল, মূল্যবান কাঠ চুরি করে কেটে নিয়ে লাখ লাখ টাকা অবৈধভাবে অর্জন করেছে। বনের স্থানীয় বিট অফিসার তার ভয়ে মুখ খোলতে সাহস পায় না। তার ছত্রছায়ায় আংগারগাড়া সহ আশপাশে বেশ কয়েকটি স’মিল স্থাপন করে প্রতি মাসে মোট অংকের টাকা কামায় করেছে। দিন রাত প্রকাশ্যে স’মিল গুলিতে বনের কাঠ কাটা হতো। আংগারগাড়া মৌজার ২৬৫নং দাগে খাস জমিতে পিতার নামে এম,রহমান আইডিয়েল স্কুল প্রতিষ্ঠান করছে। এ স্কুলের নামে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে কাঠ ও নগদ টাকা আদায় করে। শহীদ মুক্তিযোদ্ধা কলেজের টিনের চৌচালা ঘর ভেঙ্গে পিতার নামে প্রতিষ্ঠিত স্কুলে ব্যবহার করে।

পিতার প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। সরকারী বিভিন্ন বরাদ্দ বন্টনের দায়িত্ব ছিল যুবরাজের হাতে। টিআর,কাবিখা সহ সরকারী বরাদ্দ থেকে তাকে কমিশন দেয়া ছাড়া কেউ কাজ করতে পারতো না। কামাল নিজে বাটাজোর সোনার বাংলা ডিগ্রি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রভাষক। আ’লীগ সরকার গঠনের পর পিতা ভাইস চেয়ারম্যান হওয়ায় কলেজে তার উপস্থিতি ছিল অনিয়মিত। তাকে বলার মতো কলেজে কেউ ছিল না।

অপর এক সূত্র জানায় আতাউর রহমান ওরফে কামালের প্রতিবেশি এক চাচা হাফেজ আমিনুল ভালুকা হবিরবাড়ি জীবনতলা নুরুল উলুম মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন গত ১এগারো সরকারের সময় জেএমবির সাথে সম্পৃক্তার ব্যাপারে গুজব ওঠে। সে সময় সে গা ঢাকা দিয়ে চলে যায় টাঙ্গাইলে,বর্তমানে,সেখানে একটি মসজিদের ঈমামতি করছেন। মাঝে মধ্যে তিনি গ্রামে আসেন। পরবর্তীতে বিষয়টি আস্তে আস্তে বিষয়টি স্তিমিত হয়ে যায়। হবিরবাড়ি জীবনতলা নুরুল উলুম মাদ্রাসা থেকে গত ২০০৫ সালে ২৮শে মে জেএমবি’র নেতা মুফতী আব্দুর রউফকে সস্ত্রীক র‌্যাব সদস্যার গ্রেফতার করে।

এ ছাড়াও বিভিন্ন সুত্র থেকে জানাযায়, ঘটনার পর থেকে আতাউর রহমান কামাল গা ঢাকা দিয়ে ঢাকায় গিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ দলিয় কেন্দ্রিয় নেতাদের কাছে জোরতদ্বির চালাচ্ছে এ অভিযোগ থেকে রেহায় পেতে।

ছেলে রক্ষা করতে পিতার সংবাদ সম্মেলনঃ- ছেলেকে রক্ষা করতে ২মে দুপুরে ভালুকা প্রেস ক্লাবে আতারউর রহমান কামালের পিতা ভালুকা উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মজিবুর রহমান তার ছেরে স্বপক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি বলেন- ত্রিশাল উপজেলার সাইনবোর্ড এলাকায় জেএমবির সাজাপ্রাপ্ত তিন আসামী ছিনতাইয়ের ঘটনায় একটি বিশেষ মহল আমার ছেলে ও পরিবারকে জড়িয়েছে, আসামী ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে র‌্যাব  ভালুকা উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে ৭জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত কামাল উদ্দিন সবুজ র‌্যাব সদর দফতরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আমার ছেলে কামালের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছে তা মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রণোদিত। আমি এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

এ সময় সম্মেলনে ডাকাতিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম মাস্টার, আওয়ামীলীগ নেতা আনিসুর রহমান মাস্টার, ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি হারুন অর রশিদ ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ্ আল মামুনসহ আওয়ামীলীগ ও যুবলীগের ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

ভালুকা বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই