তারিখ : ০১ মে ২০২৪, বুধবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

ঘুষ দিতে অস্বীকার করায়,ভালুকা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা গুড়িয়ে দিল মুক্তিযোদ্ধার বসত বাড়ি

ঘুষ দিতে অস্বীকার করায়,ভালুকা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা গুড়িয়ে দিল মুক্তিযোদ্ধার বসত বাড়ি
[ভালুকা ডট কম : ১২ মে]
রবিবার(১১মে) বিকালে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মাইন উদ্দিন খানের নেতৃত্বে হবিরবাড়ি রেঞ্জ অফিসের লোকজন নিয়ে মৃত মুক্তিযোদ্ধা আমীর উদ্দিন খান ৪০বছরের পুরনো বসত ঘর গুড়িয়ে দিয়ে মালামাল জব্দ করে নিয়ে যায়। বনের লোকজনের কাছে লাঞ্ছিত হয়েছেন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী ও পুত্রবধূ।

ক্ষতিগ্রস্থ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের লোকজন জানান, মৃত মুক্তিযোদ্ধা আমীর উদ্দিন খান ১৬বছর পূর্বে মারাযান। গত ৪০বছর যাবত ভালুকা উপজেলা মেহরাবাড়ি মৌজার ১০৯নং দাগে বাড়ি নির্মাণ করে বসত করে আসছিলেন। যেখানে বীর মুক্তিযোদ্ধা আমীর উদ্দিন খান চির নিদ্রায় শায়িত আছেন।

গত কয়েক দিন পুর্বে ঝড়ে ওই পরিবারের বসত ঘর ও গরুর গোহাল ঘর উড়িয়ে নিয়ে যায়। স্থানীয় বনের লোক আব্দুল মালেক,ওয়াদুদ ও হালিম মিয়াকে ১৫হাজার টাকা দিয়ে তারা ঘর মেরামত ও গোয়াল ঘর নির্মাণ শুরু করে।

বনের লোকজন রবিবার (১১মে) বিকালে এসে বসত ঘর,গোয়াল ঘর গুড়িয়ে দিয়ে মালামাল ভালুকা রেঞ্জ অফিসে নিয়ে যায়। এ ঘটনার পর থেকে মক্তিযোদ্ধার পরিবারটি  বনের মামলায় আসামী হওয়ার আশংকায় দিন কাটাচ্ছেন।

মৃত মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী আসিয়া খাতুন জানান,বনের লোক তাদের ঘর ভেঙ্গে নিয়ে যাওয়ায় তার ২ছেলে,১মেয়ের নাতীসহ ২০সদস্য নিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন। তিনি আরও অভিযোগ করেন,আমাকে ও আমার পূত্র বধূ খালেদাকে বন বিভাগের লোকজন শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত করেছে।

বনের লোকজনের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটি ঘুষ দাবীর অভিযোগ করে। অভিযানে আসা বনের লোকজন এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের সামনে মুখ খোলতে রাজি হয়নি।

মুক্তিযোদ্ধা সন্তান খাইরুল বাশার অভিযোগ করেন, এ জমি আমরা সিএস ও আরও আর এর মালিকদের কাছ থেকে ক্রয় করেছি। বর্তমানে এ জমি আমাদের নামে নাম মাঠ জরিপও হয়েছে। স্থানীয় রেঞ্জ অফিসার আবুল কাশেম তার কাছে প্রতি রুমের জন্য ২০হাজার টাকায় ঘুষ দাবি করেন। কিন্তু সে এত টাকা দিতে অস্বীকার করেন। সেই প্রতি হিংসায় রবিবার বিকালে রেঞ্জার,বিভাগীয় বন কর্মকর্তাকে নিয়ে তার বসত ঘর,রান্না ঘর ও গোয়াল ঘর গুড়িয়ে দিয়ে মালামাল জব্দ গাড়ি যোগে অফিসে নিয়ে যায়। ঘর গুলি ভেঙ্গে নেয়ার পর রবিবার (১১মে) রাতে বৃষ্টি শুরু  হলে গরু গুলি নিয়ে বৃষ্টিতে ভিজেছে,সারা রাতে ঘুমাতে পারেনি। একটি ঘরের জন্য তার বিয়ে যোগ্য ২টি মেয়েকে বিয়ে দিতে পারছে না। এ জমি দখলের জন্য স্থানীয় ভূমি দালালরা বনের লোকজনকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে তাকে উচ্ছ্বেদ করার জন্য পায়তারা করছে। তাকে উচ্ছ্বেদ করতে পারলে শিল্পপতিদের কাছে মোটা অংকের টাকায় ওই জমি বিক্রি করে দিতে পারবে।

তিনি আরও অভিযোগ করেন,গত ১৫দিনে এ এলাকায় কমপক্ষে ৪০টি বিল্ডিং হয়েছে বনের জমিতে। সে সব বিল্ডিং এর মালিকদের কাছে রেঞ্জারকে প্রতি রুমে ২০হাজার টাকা নিয়ে তাদেরকে ঘর নির্মাণের অনুমতি দিয়েছেন।

ভালুকা উপজেলা বনের জমিতে বহু শিল্পপতি,প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তি,ব্যবসায়ী বনের লোকজনকে ম্যানেজ করে হাজার হাজার একর বনের জমি দখল করে নিয়েছে। সম্প্রতি হবিরবাড়ি রেঞ্জ অফিস থেকে ২শত গজ দূরে ৫তলা ফাউন্ডেশন দিয়ে ১তলার কাজ সম্পন্ন করেছে। হবিরবাড়ি মৌজায় রেঞ্জ অফিসের ২০০ গজ পূর্বপার্শে ১৮৫ দাগে নাজমুল, দুলাল মৌলভী ১৫৬ দাগে মামুন,জামাল হোসেন ও আফাজ উদ্দিন বহুতলা ভবন করছেন। এছাড়াও ৯,৮৭,১১০,১৫৪ ও ৭৮৮দাগ সহ উপজেলার বিভিন্ন মৌজায় শতাধিক নতুন বিল্ডিং করা হচ্ছে।

বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মাইন উদ্দিন খান বলেন,“বনের জমিতে নতুন ঘর করতে ছিল আমি আমার লোকজন নিয়ে তাদের সে সব ঘর ভেঙ্গে মালামাল জব্দ করে নিয়ে এসেছি”।



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

ভালুকা বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই