তারিখ : ০২ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

ভালুকায় সওজের উপ-বিভাগীয় প্রকৌলীর কার্যালয় সহ প্রায় ৪০কোটি টাকা মূল্যে জমি দখল

এল এ অফিস থেকে অধিগ্রহণের নথি গায়েব
ভালুকায় সওজের উপ-বিভাগীয় প্রকৌলীর কার্যালয় সহ প্রায় ৪০কোটি টাকা মূল্যে জমি দখল
[ভালুকা ডট কম : ০৭ জুলাই]
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহা সড়কের পাশে সড়ক ও জনপথের ভালুকা উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীর কার্যালয় সহ সওজের অধিগ্রহণ করা মূল্য প্রায় ৪০কোটি টাকা মুল্যের ৩একর ২৫শতাংশ জমি স্থানীয় একটি সংঘবদ্ধ চক্র সওজের  অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে বিনা বাঁধায়  দখল করে বসত ঘর ও দোকান পাঠ নির্মাণ করেছে। এছাড়াও দখলদার চক্রটি এল এ অফিস থেকে অধিগ্রহণের নথি গায়েব করে দিয়েছে।স্থানীয় মূল্যবান এ জমিটি উদ্ধারের জন্য জনগণ যোগযোগ মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
    
জানাযায়, ময়মনসিংহ এলএ কেইস নং ১১৫/১৯৬৮-৬৯ইং এর মাধ্যমে ভালুকা মৌজার ২৭৬ ও ৪১০ নং খতিয়ান যথাক্রমে ৩৭নং দাগে ২একর ৯৩শতাংশ ও ১৭নং দাগে ৩২শতাংশ মোট ৩একর ২৫ শতাংশ জমি বিষ্ণুরাম মন্ডল ও দ্বীনবন্ধু নমদাসের কাছ থেকে সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলীর নামে অধিগ্রহণ করা হয়। পরবর্তীতে ১৯/০৫/১৯৭২সালে ওই জমি সড়ক ও জনপথের নামে সরকারী গেজেটভূক্তও হয়। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহা-সড়ক নির্মাণ করার সময় ও জমিতে সওজের ঠিকাদারগণ ব্যবহার করে। ১৯৯১সালে ওই জমিতে সড়ক ও জনপথের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীর কার্যালয়ের জন্য একটি বিশাল বড় একটি অফিস ঘর নির্মাণ করা হয়।

বিভাগীয় প্রকৌশলীর কার্যালয়টিতে সংশ্লিষ্ট কমকর্তা নিয়মিত অফিস না করায় এবং বিশাল জমিতে কোন পুরোপুরি সীমানা প্রাচীর নির্মাণ না করায় স্থানীয় একটি চক্রের প্রধান রফিকুল ইসলাম,প্রাণেস দাস,টিপু দাস,নন্দ দাস,লিটন এবং সওজের আসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে প্রকৌশলীর কার্যালয় সহ পুরো জমি দখল করে নেয়। দখলকৃত এ জমির বর্তমান মূল্য প্রায় ৪০কোটি টাকা। চক্রটি জমিটি দখলের পর বাড়ি ঘরের পাশা-পাশি একটি মন্দিরও নির্মাণ করেছে। মন্দির বানানো কারণ হলো,যাতে কেউ সহজে ওই জমি থেকে তাদেরকে উচ্ছ্বেদ করতে না পারে। উচ্ছ্বেদ করলে তারা ইস্যু হিসাবে দাড় করাবে সংখ্যালঘুদের মন্দির সহ বাড়ি ঘর থেকে উচ্ছ্বেদ করা হয়েছে। এক বছর যাবত জমিটি জবর দখল করে রাখার পর সওজ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম আল মামুন জেলা প্রশাসককে একটি চিঠি দিয়েই তার দায়িত্ব শেষ করে দেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সওজ এর কর্মচারী বলেন,এ জমিতে প্রথম যখন ঘর করে তখন আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণকে জানানোর পর তিনি কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি এবং আমাদেরকে বাঁধা দিতে নিষেধ করেছেন। তখন যদি আমাদেরকে নির্দেশ দিত ভালুকায় আমরা যারা সওজ এ কর্মরত আছি আমরা সবাই একযোগে বাঁধা দিলে এ জমি আজ বেদখল হতো না। আমাদেরকে যদি সওজের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ নির্দেশ দিত তাহলে তখনই তাদের নির্মাণাধীন স্থাপনা ভেঙ্গে দিতাম। এক বছরে দখলদাররা জমিতে ১০/১২টি বসত ঘর নির্মাণ করেছে। চক্রটি সওজের জমি জবর দখল করে নিয়ে বর্তমানে সেই জমি ভাড়াও দিয়েছে। ভাড়াটিয়া মহা সড়ক ঘেঁসে সেখানে বিশাল আকৃতির দোকান ঘর নির্মাণ করছেন। এ হিন্দু পরিবারটিকে গোপনে একটি বিশেষ প্রভাবশালী চক্র নানা ভাবে সহযোগিতা করছে। যদি হিন্দু পরিবারটি ছলে বলে জমিটি দখলে আনতে পারে পরে প্রভাবশালী চক্রটি নামমাত্র মূল্যে তাদের কাছে থেকে কিনে নিয়ে যাবে।
     
স্থানীয় একটি সুত্র জানায়,প্রায় ৪৫বছর যাবত সড়ক ও জনপথ বিভাগে জমিটি তাদের দখলে থাকার পরও হঠাৎ করে এসএ রেকর্ডের মালিকদের উত্তরাধিকারীরা ওই জমি দখল করে নিলেও সওজের কর্মকর্তাদের ভূমিকা সত্যিই হাস্যকর। ১৯৬২সালের এসএ রেকর্ড হয়,আর সওজ জমি অধিগ্রহণ করে ১৯৬৮-৬৯সালে এস,এ রেকর্ডের মালিকদের কাছে থেকে। দখলদাররা একটি শক্তিশালী চক্র তারা ময়মনসিংহ এলএ অফিস থেকে অধিগ্রহণের কাগজপত্র অফিসের লোকজনের মাধ্যমে গায়েব করে দিয়েছে। শুধু মাত্র অধিগ্রহনের গেজেটটি গায়েব করতে পারেনি। শুধুমাত্র প্রকাশিত ওই গেজেট ও উপ- বিভাগীয় কার্যালয়টি থাকার কারণে বুঝা যায় এ জমিটি সড়জ ও জনপথের। এ দখলের সাথে সড়ক ও জনপথ বিভাগের  ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যোগসাজশ রয়েছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ রয়েছে।
    
ভালুকা মৌজার ৩৭নং দাগে ২একর ৯৩ শতাংশ ও ১৭নং দাগে১৮শতাংশ মোট ৩একর ১১শতাংশ জমি  এল এ কেইস নং ৪৪/১৯৮২-৮৩ মূলে ভালুকা উপজেলা কোর্ট ভবনের নামে অধিগ্রহণ করে বলে স্থানীয় ভূমি অফিস সূত্র জানায়। ৩একর ১১শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করলেও বর্তমানে উপজেলা কোর্ট ভবনের নামে ১একর ৫৪শতাংশ জমির খাজনা উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে বাংলা ১৪১৫সন পর্যন্ত পরিশোধ করেছে। প্রশ্ন হলো ওই জমি যদি সওজের নাও হয়ে থাকে তাহলে ওই জমি ভালুকা কোর্ট ভবনের। যেহেতু কোর্ট ভবনের নামে ৩একর ১১শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করা সেই জমির মধ্যে কোর্ট ভবনের দখলে আছে ১একর ৫৪শতাংশ। বাকী ১এক একর ৫৭শতাংশ জমি এখনো ভালুকা কোর্ট ভবনের বেদখলে রয়েছে। তাহলে কোর্ট ভবনে সেই জমি উপজেলা প্রশাসন কেন দখলদারদের কাছ থেকে দখল মুক্ত করছে না?
    
দখলদারদের প্রধান রফিকুল ইসলাম বলেন,১৯৬৮-৬৯সালে ঢাকা ময়মনসিংহ মহা-সড়ক নির্মাণ হয় তখন রোডের ঠিকারদাররা এ জমি ভাড়া নেয়। ঠিকাদারদের কাজ করার পর জমির মালিকরা ভেবে ছিল এ জমি সওজ অধিগ্রহণ করে নিয়ে গেছে। বর্তমানে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে সড়ক ও জনপথ এ জমি অধিগ্রহণ করে নেয়নি।
    
সওজ এর এস,ও আশরাফ হোসেন বলেন, এখানে আমাদের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীর কার্যালয় সহ সওজের বিভিন্ন বেইলি ব্রীজের যন্ত্রাংশ,রাস্তা মেরামতের জন্য ইট,বালি রাখা ছিল। স্থানীয় একটি চক্র জোরপূর্বক সওজের জমিটি দখল করে নিয়ে গেছে।
    
সওজ এর উপ বিভগীয় প্রকৌশলী এ বি এম সাদ্দাম হোসেন বলেন,“আমাদের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম আল মামুন সাহেব দখল দারদের ঊচ্ছ্বেদের জন্য আমি ডিসির কাছে ম্যাজিস্টেড নিয়োগের জন্য চিঠি দিয়েছি”।
    
ভালুকা উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল আহসান তালুকদার বলেন,জমিটি সড়ক ও জনপথের তারা যদি এ জমি থেকে দখলদারদেরকে উচ্ছ্বেদের জন্য বিধিগত ভাবে ব্যবস্থা নেয় প্রশাসনিক ভাবে আমি ব্যবস্থা নেব।



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

ভালুকা বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই