তারিখ : ০২ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

ভালুকায় একজনের জমি অন্যের থেকে দলিল করে জবর দখলের অভিযোগ

১৫ একর অর্পিত ও ৯৫ শতাংশ বনবিজ্ঞপ্তিত জমিসহ
ভালুকায় একজনের জমি অন্যের থেকে দলিল করে জবর দখলের অভিযোগ
[ভালুকা ডট কম : ৩০ নভেম্বর]
ভালুকা উপজেলার আংগারগাড়া মৌজার ৩৭৫ দাগের সরকারের ১৫ একর অর্পিত সম্পত্তি, ৯৫ শতাংশ বনবিজ্ঞপ্তিত জমি, ওই দাগের দখলীয় সকল মালিকদের না জানিয়ে গোপনে ত্রুটিপূর্ণ ডিমারগেশনের মাধ্যমে এবং একজনের মালিকানা ও ভোগদখলে থাকা জমি অন্যের নিকট থেকে দলিল করে প্রতিবন্ধী ও নিরীহ কৃষকদের জমি আলহাজ্ব এসএম উমর আলী ওরফে উমর পিআইও নামের স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তি কর্তৃক কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে জবর দখল করার অভিযোগ উঠেছে। রবিবার সকালে ত্রুটিপূর্ণ ডিমারগেশন বাতিল ও  জবর দখলকৃত জমি উদ্ধারের দাবীতে উপজেলার আঙ্গারগাড়ায় ভালুকা-সখিপুর সড়কে মানববন্ধন করেছে ভোক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।

সরেজমিনে গেলে আমিনুল ইসলামসহ স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, উমর পিআইও ওই মৌজা ও দাগের প্রায় ৭দশমিক ৯১একর জমি ৯জনের নামে ডিমারগেশন ও খারিজ করানোর পর তার নামে দলিল করে নিয়েছেন। কিন্ত তার কাটা তারের বেড়ার মধ্যে জমি রয়েছে অনেক বেশী, যা সরকারী সার্ভেয়ার দিয়ে মাপলে জমি বের হয়ে আসবে। এসব বেশী জমির মালিক আংগারগারা, ডাকাতিয়া ও কালিহাতি রামপুর এলাকার প্রতিবন্ধী ফালু মিয়াসহ কমপক্ষে ৬/৭জন নিরীহ কৃষক। তাদের অভিযোগ  তারা তাদের ওই জমি পিআইওর কাছে বিক্রি করেন নাই। অন্যের কাছ থেকে তাদের মালিকানা ও ভোগদখলীয় জমির দলিল নিয়ে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করে কৌশলে জবরদখল করে নিয়েছেন। তবে, এসএম উমর আলী অভিযোগ অস্বীকার করে বলছেন অন্য কথা।

পিআইওর ৯দাতার মধ্যে আবু হানিফ সরকার ওরফে হানিফ ভেন্ডার ও সুলতান মামুদ অন্যতম। হানিফ ভেন্ডার ১৯৯৭সালে তিনজন মালিকের নিকট থেকে ওই দাগের ২একর ৪০শতক জমির দলিল নেন। অথচ ওই দলিল দাতাদের এই জমিতে কোন অস্তিত্বই ছিলনা। একই বছর তিনি ভাগিনা হিসাবে টাঙ্গাইল রামপুর এলাকার ওমেদ আলীর দানপত্র দলিল মূলে ওই দাগের আরো দেড় একর জমির মালিকানা দাবি করে চলতি বছর ওই জমি উমর আলীর নামে দলিল করে দেন। অথচ ওই জমি কোন দিনও তার ভোগদখলে ছিলনা। এদিকে বৃদ্ধ ওমেদ আলীর দাবি, হানিফ তার কোন আত্মীয় না। ওই জমি তিনি তাকে দলিল করে দেননি। ওই দলিল বাতিলের জন্য তিনি আদালতের একটি মামলা করেছেন যার নং ১১৪/২০১৪। ওইসব অভিযোগ অস্বীকার করেন হনিফ ভেন্ডার।

অপরদিকে, সুলতান মামুদের দলিল পর্যালোচনা করে জানাযায়, আংগারগারা মৌজার ৩৭৫দাগের ২একর সাড়ে ১৫শতাংশ জমির মালিক ছিলেন সিরাজ সরকার। সিরাজ সরকারের মৃত্যুর পর উত্তরাধিকার সূত্রে তার সন্তান আবদুস ছামাদ, আবদুর রহমান, মালেকা খাতুন ও জেলেমন নেছা ওই জমির মালিক হন। পরে, জেলেমন ছাড়া সিরাজ সরকারের অন্যান্য সন্তানেরা ১৯৮৪সালের মধ্যেই বিভিন্ন জনের কাছে তাদের অংশের জমি বিক্রি করে দেন। পরবর্তীতে, সুলতান মামুদ ১৯৮৬সালে আবদুর রহমান ও জেলেমনের নিকট থেকে দু’টি দলিলে ১একর ১৪শতক জমি রেজিস্ট্রি করেন। পরে চলতি বছর সুলতান মামুদের নিকট থেকে উমর আলী পিআইও ওই জমির দলিল করে নেন।

আংগারগারা গ্রামের শারীরিক প্রতিবন্ধী বৃদ্ধ ফালু মিয়া জানান, উমর আলী পিআইওর দেয়া কাঁটাতারের বেড়ার ভিতর তার  অবিক্রিত আরও সাড়ে তিন কাঠা জমি রয়েছে। ক্রয় সূত্রে মালিকনা লাভ করে ১৯৮১ সাল থেকে তিনি ওই জমি ভোগদখল করছেন। জমিটি আমার নামে নতুন মাঠ পর্চা হয়েছে। ওই জমিতে তার কাঁঠাল বাগান ছিল। ওই বাগানের কাঁঠাল বিক্রি করা ও শারীরিক প্রতিবন্ধী হিসাবে সরকারের দেওয়া সামান্য ভাতার টাকায় কোন মতে চলে তার সংসার। একই গ্রামের জামাল হোসেন, সোনা মিয়া ও সন্দেশ আলী জানান, তাদের নামেজারি খারিজ ভোগদখল ও দলিল থাকা সত্বেও বিক্রি না করার পরও তিনজনের ২একর ৪৭শতাংশ জমির চারদিকে কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছে উমর আলী পিআইওর লোকেরা। এ জন্যে সোনা মিয়া ও সন্দেশ আলী বাদী হয়ে এসএম উমর আলী গংদের আসামী করে সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতে দু’টি মামলা (নং ৩৩১/২০১৪ ও ৩৩২/২০১৪) দায়ের করেছেন। এছাড়াও উমর পিআইওর ৯ জমিদতার নামে ত্রুটিপূর্ণ ডিমারগেশন বাতিল চেয়ে  ময়মনসিংহের সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে এলাকার ২৫জন নিরীহ কৃষক মামলা(নং ১২০/২০১৪) দায়ের করেছেন।

এ ব্যাপরে এসএম ওমর আলী পিআইও জানান, ওই দাগের জমিতে বনের দাবি ছিল। ডিমারকেশনের পর খাজনা-খারিজ করা প্রকৃত মালিকদের নিকট থেকে ক্রয় করে ওই জমিতে কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছেন। অন্যের জমি জবরদখলের প্রশ্নই আসেনা।

ডাকাতিয়া ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আবদুস ছালাম জানান, আংগারগারা মৌজর ৩৭৫দাগে মোট জমির পরিমান ৩৫দশমিক ৩২একর। এর মাঝে ১৫একর জমি অর্পিত সম্পত্তি এবং ৯৫ শতাংশ জমিতে বনের দাবি রয়েছে। অবশিষ্ট জমি ব্যক্তি মালিকানায়। তিনি ডাকাতিয়ায় যোগদান করার আগেই ওই দাগের জমির ডিমারগেশন হয়েছে। তার মতেও ওই ডিমারগেশনের সময় জমির বেশ কয়েকজন মালিক ও দখলদার ডিমারগেশন থেকে বাদ পড়েছেন।

ডাকাতিয়া ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি আলহাজ্ব নূরুল ইসলাম মাস্টার ও ইউপি চেয়ারম্যান আতিকুজ্জামান লস্কর জানান, এ ব্যাপারে ইউনয়ন পরিষদে দুই দফা শালিস দরবার হওয়ার কারনে বিষয়টি তারা জানেন এবং তাদের জানামতে, ডিমারগেশন থেকে বাদপড়া ওই জমির দাবিদারদের দাবি সঠিক। ##



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

ভালুকা বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই