তারিখ : ১২ মে ২০২৪, রবিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

ময়মনসিংহে ২৩০ ইট ভাটার লইসেন্স নেই

ময়মনসিংহে ২৩০ ইট ভাটার লইসেন্স নেই
[ভালুকা ডট কম : ২৩ মার্চ]
বিভিন্ন স্থল বন্দরে কয়লার সংকটের দোহাই দিয়ে ময়মনসিংহের বেশির ভাগ ইটভাটায় কয়লার বদলে পুড়ানো হচ্ছে কাঠ। ইটভাটা মালিকেরা প্রতিদিন হাজার হাজার মন কাঠ পুড়ালেও প্রশাসন একেবারে নীরব। এসব ভাটার বিরুদ্ধে প্রশাসন কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

ময়মনসিংহের সদর উপজেলার কাতলাসেন ,দাপুনিয়া, বারেরা ও ফুলবাড়ীয়া উপজেলার লক্ষীপুর বাজার, দেওখলা এলাকার কমপক্ষে ২০টি ইট ভাটায় সরেজমিনে দেখা যায় চারটি ইটখলা ছ্াড়া বাকী সবগুলোতেই  পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। এসব ভাটার সামনে প্রকাশ্যে কাঠের স্তুপ দেখা যায়।

ময়মনসিংহ- ফুলবাড়ীয়া সড়কের পাশে বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গাছের কাঠ স্তুপ করে রাখা হয়েছে। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, এসব কাঠ সুবিধামত সময় ভাটায় নিয়ে গিয়ে পোড়ানো হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি ইট ভাটায় কর্তব্যরত দায়িত্ববান ব্যক্তি জানান, বিপুল পরিমান কাঠ ভাটার সামনে স্তুপ করে রাখলে বিষয়টি  দৃষ্টিকটু বলে কৌশল হিসাবে মালিকেরা সড়ক ও সড়কের পাশে বিভিন্ন বাড়ির সামনে কাঠ স্তপ করে রাখেন।

সম্প্রতি বিভিন্ন উপজেলার ইট ভাটার মালিক ও কর্মচারিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার গোবরাকুড়া ও কড়ইতলী স্থল বন্দর দিয়ে এসব ভাটার মালিকেরা ভারতীয় কয়লা এনে ইট পোড়ায়। কিন্তু এবছর ওই দুটি বন্দর দিয়ে ভারতীয় কয়লা আমদানি না হওয়ায় কয়লার সংকটের কারনে তাঁরা কাঠ পোড়াচ্ছেন।

ময়মনসিংহ-ফুলবাড়ীয় সড়কের দাপুনিয়া বাজার থেকে ফুলবাড়ীয় উপজেলার লক্ষীপুর বাজার এলাকা পর্যন্ত কমপক্ষে তিনটি ইটভাটায় শ্রমিক ও দায়িত্ববান কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতিটি ইট ভাটায় গড়ে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ মন করে কাঠ পোড়ানো হয়। ফুলবাড়ীয়ার গারো পাহাড়, টাঙ্গাইলের মধুপুর গড়সহ স্থানীয় বিভিন্ন এলাকা থেকে কাঠ ব্যবসায়ীরা এসব কাঠ যোগান দেন।  জানতে চাইলে ওই তিনটি ইট ভাটার দায়িত্ববান কর্মকর্তারা বলেন, দুই মাস ধরে ওই এলাকার প্রায় ৩০টি ভাটায় কাঠ পোড়ালেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন দিনই অভিযান চানালো হয়নি। প্রশাসনের কঠোরতা না থাকার জন্যই তাঁরা নিবিঘ্নে কাঠ পোড়াচ্ছেন। সরকারি ভাবে দমন করা হলে তাঁরা এ সুযোগ পেতেন না।

পরিবেশ অধিদপ্তরের ময়মনসিংহ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলার ১৩ টি উপজেলায় বর্তমানে ২৮০টি ইটভাটা রয়েছে এবং লাইসেন্সপ্রাপ্ত ইটভাটার সংখ্যা হলো ৫০টি। তবে কতটি ভাটায় নিয়ম মেনে কয়লা পোড়ানো হয় সেই পরিসংখ্যান পরিবেশ অধিদপ্তর জানে না।একজন স্থানীয় পথচারী বলেন, গাছই মানুষের জীবন আর মানুষই গাছ কেটে দেশটাকে বানিয়েছে মরুভ’মি।

পরিবেশ অধিদপ্তরের ময়মনসিংহ কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. ইউসুফ আলী বলেন,  ”কাঠ পুড়ানো যে নিষিদ্ধ সেটা সবাই জানে। কিন্তু আমি কি করবো ? এ ব্যপারে সামাজিকভাবে সবাই এগিয়ে না আসলে আমার পক্ষে কাঠ পোড়ানো বন্ধ করা সম্ভব নয়। দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারনে প্রশাসনের সবাই ব্যস্ত থাকার কারনে অভিযান চালানো সম্ভব হচ্ছে না।” তিনি বলেন জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলে দ্রুতই ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ওইসব ইট ভাটায় অভিযান চালানো হবে।”
 
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল আহাদ (সার্বিক) কাছে কাঠ পুড়ানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারনে পুলিশ ব্যস্ত থাকায় ইচ্ছা সত্ত্বেও ওইসব ভাটার বিরুদ্ধে অভিযান চালানো সম্ভব হচ্ছে না।  তবে শিঘ্রই অভিযান কার্যক্রম চালানো হবে।



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই