তারিখ : ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

নওগাঁর নারীরা চুল গুছিয়েই হচ্ছেন স্বাবলম্বী

নওগাঁর নারীরা চুল গুছিয়েই হচ্ছেন স্বাবলম্বী
[ভালুকা ডট কম : ০৫ জুলাই]
দেশের বিভিন্ন জেলার অলি-গলি বাড়ি বাড়ি ঘুরে চুল সংগ্রহ করে ফেরিওয়ালারা (ভংচং) নামে পরিচিত। সাইকেলের সামনে বাশেঁর একটা ফেম(ঠাট নামে পরিচিত) হরেক রকমের (প্লাস্টিকের খেলনা, চুরি, নাক-কানের দোল, ফিতা, খোপা, ক্লিপ) সামগ্রী সাজিয়ে নিয়ে কখনো টাকা এবং ওইসব জিনিসের বিনিময়ে চুল সংগ্রহ করে থাকেন। ফেরিওয়ালারা চুলগুলো নওগাঁর মান্দা উপজেলার চৌবাড়িয়া হাটে চুল ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেন। সোম ও শুক্রবার হাটের দিনে সেখানকার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চুল কিনে আনেন কারখানার মালিকেরা। আর এইসব চুলে জট লেগে থাকে।

চুলের জট ছাড়ানোর জন্য হতদরিদ্র মহিলারা এ কাজ করে থাকেন। চুলের জট ছাড়িয়ে পারিবারিক কাজের ফাঁকে সংসারে যোগ করছেন বাড়তি কিছু আয়। মান্দা উপজেলার প্রত্যান্ত গ্রামের নারীরা এইসব কাজ করেন। আর এ কাজ করে এখন অনেকে স্বচ্ছলতা মুখ দেখছেন।

অভাব ছিল তাদের নিত্যসাথী। বর্তমানে চুল প্রক্রিয়াকরণ কারখানায় কাজ করে অনেকেই এখন অভাবকে দূর করেছেন। এই কাজ করে অনেকেই এখন স্বাবলম্বী হচ্ছেন। শুধু গরীব গৃহবধু না এমন কি শিক্ষার্থীরা পড়াশুনার পাশাপাশি এ কাজ কে বেছে নিয়েছেন।

মান্দা উপজেলার মজিদপুর, হোসেনপুর, আইড়রপাড়া, খাগড়া, বাঁকাপুর, চাকদহ, দূর্গাপুরসহ ১৫টি গ্রামের প্রায় ৩৬টি কারখানায় প্রায় ৭’শ নারীর কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার হোসেনপুর এবং মজিদপুর গ্রামে প্রায় ১৪বছর ধরে কারখানা করে চুলের ব্যবসা করছেন আমির মল্লিক। কারখানায় কর্মরত আছে প্রায় ১৫০জন নারী শ্রমিক।

কারখানায় কর্মরত পপি বেগম জানান, গত এক বছর ধরে চুলের জট ছাড়ানো কাজ করছেন। সংসারে অভাব থাকায় এ কাজ করে এখন স্বামীকে সহযোগীতা করছেন। সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কাজ করতে হয় এবং মাসিক ১৫’শ টাকা বেতনে।

এছাড়া কারখানায় কর্মরত ফাতেমা বিবি জানান, সাংসারিক কাজের ফাঁকে গত দুই মাস থেকে কাজ করছেন। বাড়তি টাকা সংসারের কাজসহ ছেলে মেয়েদের পড়াশুনার খরচে ব্যয় করেন।

এ কারখানায় কর্মরত ডিগ্রী শিক্ষার্থী সালমা খাতুন জানান, পড়াশুনার পাশাপাশি ছুটির দিনগুলো চুলের জট ছাড়ানোর কাজ করেন। দিনে ৫০টাকা পান। খাতা-কলম কেনাসহ ছোটখাটো ব্যয় মেটানোর জন্য এ টাকা দিয়ে করে থাকেন। এ কারখানায় প্রায় ১৫জন শিক্ষার্থী ছুটির দিনগুলোতে কাজ করে থাকে।

এছাড়া ময়না, জাহানারা, সুলতানা, ছায়েরা বিবিসহ আরও অনেকেই জানান, স্বামীর সামান্য আয়ের উপর তাদের নির্ভর করতে হতো। কষ্টে দিন চলত। এতে সংসারে কিছুটা ধারদেনা করতে হতো। চুলের জট ছড়ানো কাজ করে যে বাড়তি আয় হয় তা দিয়ে সংসারের কাজে কিছুটা স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে।

কারখানার মালিক আমির মল্লিক জানান, প্রায় ১৪বছর ধরে এ ব্যবসার সাথে জড়িত। এখন চুলের দাম ৪১’শ থেকে সাড়ে ৪হাজার টাকা। চিনরা যখন টাকা পাঠাতে দেরী করে তখন দাম কম হয়। যখন টাকা বেশী পাঠাই তখন চুলের দাম বেশী হয়। কেনার সময় চুলগুলো একসাথে মেশানো ও জটপাকানো থাকে। সেগুলো চিরুনি বা কাঁটা দিয়ে প্রতিটা চুল আলাদা করে শ্যাম্পু দিয়ে পরিষ্কার করে মেশিনে পুনঃপ্রক্রিয়া করা হয়। তারপর ১২, ১৪, ১৮, ২৪, ৩৬ ইঞ্চির গাড্ডি করে প্যাকেটজাত করে চুল সরাসরি ঢাকায় বিক্রি করেন।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই