তারিখ : ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

পত্রিকায় ছাপা পোকাসহ গমের ছবি আমদানি করা গম নয়- খাদ্যমন্ত্রী

পত্রিকায় ছাপা পোকাসহ গমের ছবি আমদানি করা গম নয়- খাদ্যমন্ত্রী
[ভালুকা ডট কম : ০৭ জুলাই]
পত্রিকায় পোকাসহ যেসব গমের ছবি ছাপা হচ্ছে তা ব্রাজিল থেকে সরকারের আমদানি করা গম নয় বলে দাবি করেছেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম।এই গম আমদানির পুরো প্রক্রিয়ার সঙ্গে নিজে জড়িত নন দাবি করে তিনি বলেছেন, আমদানির চূড়ান্ত বিলও তিনি দেখেননি।মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে পীর ফজলুর রহমানের এক প্রশ্নের জবাবে ফের গম নিয়ে কথা বলতে গিয়ে এসব কথা বলেছেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল।

ব্রাজিলের গম আমদানির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে খাদ্যমন্ত্রী বলেন,কাগজে যে সব ছবি আসছে, এগুলোর কোনো ভিত্তি নাই। পোকার কথা বলা হচ্ছে, যে ছবি আসছে, এই ছবির সাথে আমাদের গুদামের গমের কোন সাদৃশ্য নাই। এই ছবি আমাদের গমের ছবি না।অনেকেই বলে থাকেন,পোকা খাওয়া গম। পরিচর্যা না করলে পোকা যে কোনো গুদামে, আপনার বাড়িতে রাখেন, চাল রাখেন, গম রাখেন, সুষ্ঠু পরিচর্যা না করেন, ওষুধ না দেন, সেখানেও পোকা ধরবে।

গম আমদানির প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন,এই গম আমদানি করে খাদ্য অধিদপ্তর। আন্তর্জাতিক টেন্ডারে বলাই থাকে, ইসরাইল ছাড়া যে কোনো দেশের সঙ্গে টেন্ডার করা যাবে।টেন্ডারের ভিত্তিতে সর্বনিম্ন দরদাতাকে অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে পারচেজ কমিটি পাস করে। পরবর্তীতে বিল পর্যন্ত পরিশোধ করে খাদ্য অধিদপ্তর। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে বিল পরিশোধের পর্যন্ত আসে না। ফাইনাল বিল পর্যন্ত খাদ্যমন্ত্রীরা চেকও করে না। সমস্ত কিছু করে খাদ্য অধিদপ্তর।

পত্রিকায় তার ‘বিকৃত’ ছবিসহ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে অভিযোগ করে গণমাধ্যমের কাছে কামরুলের প্রশ্ন, আপনাদের কাছে কি নমুনা আছে? আপনারা পরীক্ষা করুন। আপনাদের কাছে কি প্রমাণ আছে, এই মিথ্যা ভিত্তিহীন কথা বলার।পত্রিকাগুলো বলছে, এটা নিম্নমানের। কিন্তু এটা ল্যাবরেটরি টেস্টে প্রমাণিত, এই গম খাওয়ার উপযোগী। ব্রাজিলের গমটা দেখতে খারাপ, কেউ পছন্দ করবে না। কিন্তু গুনগত মানতো ঠিক আছে। গুনগত মান ঠিক থাকলে আপনি কেন প্রশ্ন করবেন?

ব্রাজিলের গম নিয়ে আপত্তি উঠার পর নমুনা বিভিন্ন ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা হয় বলে জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন,আমি আবারও বলছি, এটা অধিদপ্তরের বিষয়। চার মাস পরে পরীক্ষা করেও দেখা যায়, এই গমের গুনগত মান নষ্ট হয় নাই, ঠিক আছে।পত্র-পত্রিকায় নিউজ আসছে, পচা গম, গন্ধযুক্ত গম। এটার কোনো ভিত্তি আছে বলে আমি মনে করি না।আমদানি করা দুই লাখ টন গমের মধ্যে এক লাখ ৭৪ হাজার ৯২৬ টন বিলি হয়ে গেছে। এই বিলি-বণ্টনের চার মাসে কোনো অস্বস্তিকর পরিস্থিতির খবর পাওয়া যায়নি।

গম নিয়ে অস্বস্তিকর খবরগুলো গত ১০-১৫ দিন ধরে পাওয়া যাচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।একটি গমটা নিয়ে একটি রাজনৈতিক মহল উদ্দেশ্যমূলকভাবে ভিত্তিহীন কথা বলছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, যে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করতে চাইলে আমি সহযোগিতা করবো। মনের সাথে মাধুরী মিশিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কথাবার্তা বলবেন না।

তারা বলছে, পুলিশ, বিডিআর আর আর্মি সবাই নাকি এই গমের বিরুদ্ধে বলছে। আমাদের কাছেতো বিডিআর, আর্মি ও পুলিশ থেকে কোন কথাবার্তা আসে নাই। কেবল পুলিশ থেকে একটা চিঠি এসেছে। ওয়ারান্টি পরিবর্তন আনার জন্য।

আমাদের বিধান হচ্ছে, গুদামে যেটা আগে এসেছে, সেটা আগে বের হবে। যেটা পরে এসেছে সেটা পরে বের হবে। আমরা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছি, এটার মান ঠিকই আছে, সুতরাং আমরা ওয়ারান্টি পরিবর্তন করবো না।পুলিশের কাছ থেকে বা বিডিআরের কাছ থেকে এই পচা গম খেয়ে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে, মরে যাচ্ছে, আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে- এ রকম কোনো কথাবার্তা, চিঠি আসছে বলে আমি শুনি নাই।

আমি পত্রিকাওয়ালাদের বিনয়ের সাথে বলবো, ভিত্তিহীন কথা বার্তা না বলা থেকে বিরত থাকুন। সাংসদদের বলবো, এই কথাগুলোর কোন ভিত্তি নাই। এগুলো আমলে নেওয়ার কোন প্রয়োজন পড়ে না।

সম্প্রতি একাধিক দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্রাজিল থেকে আমদানি করা ওই গম ‘নষ্ট ও পচা’। পুলিশ, বিজিবি, আনসার, জেলখানা, ডিলার ও আটা কল ছাড়াও টিআর (টেস্ট রিলিফ) ও কাবিখাসহ (কাজের বিনিময়ে খাদ্য) বিভিন্ন কর্মসূচিতে ওই গম বিতরণ করা হচ্ছে। এ নিয়ে পুলিশ আপত্তিও তুলেছে।পুলিশের আপত্তির বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কাছে গেলে তিনি তদন্তের নির্দেশ দিলেও খাদ্য মন্ত্রণালয় ও খাদ্য অধিদপ্তর এ নিয়ে ‘লুকোচুরি’ শুরু করে বলে একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।‘পচা গম’ আমদানির অভিযোগ ওঠার পর বিএনপির পক্ষ থেকে খাদ্যমন্ত্রীর পদত্যাগও দাবি করা হয়।তবে ওই গম ‘পচা নয়’ দাবি করে খাদ্যমন্ত্রী এর আগেও সংসদে কথা বলেন।

এরপর ‘নিম্ন মানের’ গম আমদানি ও সরবরাহের অভিযোগ দুদককে দিয়ে তদন্তের আদেশ চেয়ে পাভেল মিয়া নামের এক আইনজীবী গত ২৮ জুন এই রিট আবেদন করেন।এ বিষয়ে প্রাথমিক শুনানি করে ৩০ জুন হাই কোর্ট রুলসহ আদেশ দেয়। ওই গম মানুষের খাওয়ার উপযোগী কি-না, সে বিষয়ে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।ওই রিটের আদেশ অনুসারে ব্রাজিল থেকে চারশ কোটি টাকায় আমদানি করা গম মানুষের খাওয়ার উপযোগী বলে উচ্চ আদালতে প্রতিবেদন দিয়েছে খাদ্য অধিদপ্তর।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

ভালুকার বাইরে বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই