তারিখ : ১৬ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

করিমগঞ্জে নরসুন্দা নদীতে গ্রামবাসীদের তৈরি বাঁশের সাঁকোয় ঝুকিপূর্ণ পারাপার

করিমগঞ্জে নরসুন্দা নদীতে গ্রামবাসীদের তৈরি বাঁশের সাঁকোয় ঝুকিপূর্ণ পারাপার
[ভালুকা ডট কম : ২৩ ফেব্রুয়ারী]
কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে নরসুন্দা নদীর উপর একটি পাকা সেতুর জন্য অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে দু’টি উপজেলার চারটি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ। গ্রামবাসী চাঁদা তুলে একটি বিশাল বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেছিলেন কয়েক বছর আগে। এটিও প্রায় ভেঙ্গে গেছে। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জরাজীর্ণ বাঁশের সাঁকো দিয়েই প্রতিদিন পারপার করছেন শত শত শিক্ষার্থী। বার বার আশ্বাসের পরও এখানে একটি পাকা সেতু নির্মাণ করা হচ্ছেনা। প্রশাসন আর জনপ্রতিনিধিরা পাকা সেতু নির্মাণে বার বার প্রতিশ্রুতি দিলেও আলোর মুখ দেখছেনা সেতু নির্মাণ।

জানা গেছে, কয়েক বছর আগে করিমগঞ্জ উপজেলার কিরাটন ইউনিয়নের লাখপুর আজিমোর বাজার এলাকায় নরসুন্দা নদীর ওপর একটি বিশাল বাঁশের সাঁকো নির্মিত হয়। তবে
সরকারি উদ্যোগে নয়। দুর্ভোগ থেকে রেহাই পেতে গ্রামবাসী নিজেরা চাঁদা দিয়ে আর নিজেদের শ্রমে নির্মাণ করেন এটি। বর্তমানে ভেঙ্গে পড়া জরাজীর্ণ এ সাঁকো দিয়ে পারাপার করছে করিমগঞ্জ ও তাড়াইল উপজেলার কিরাটন, দেহুন্দা, গুজাদিয়া ও দিগদাইর ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ। আর সবচেয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জরাজীর্ণ সাঁকো দিয়ে পারপার করতে হচ্ছে তাদের।

নরসুন্দা নদীর দক্ষিন পাড়ে করিমগঞ্জ উপজেলার কিরাটন ইউনিয়নের লাখপুর, আজিমের বাজার, এবং দেহুন্দা ইউনিয়নের খামার দেহুন্দা গ্রাম। আর উত্তর পাড়ে করিমগঞ্জ উপজেলার গুজাদিয়া ইউনিয়নের ঢালারপাড় ও তাড়াইল উপজেলার দিগদাইর গ্রাম। নদী পার হয়ে শিক্ষার্থীদের দেহুন্দা উচ্চ বিদ্যালয় ও করিমগঞ্জ কলেজে আসতে হয়। নদীতে
সেতু না থাকায় ৬ কিলোমিটার পথ ঘুরে বিকল্প পথে স্কুল-কলেজে যেতে হয় তাদের। এ ছাড়া দুর্বল যোগাযোগ ব্যবস্থা আর অবহেলিত লাখপুর আজিমের বাজার ও ঢালারপাড়
এলাকাটি সব্জির জন্য বিখ্যাত। কিন্তু এখানে পাকা সেতু না থাকায় ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারছেনা। এতে ক্ষেতের ফসল আর জরুরী রোগীদের ডাক্তারের কাছে নিয়ে
যেতে বিকল্প পথে ৬ কিলোমিটার ঘুরতে হচ্ছে। এ বিড়ম্বনার যেনো শেষ নেই।

এলাকাবাসীর বিড়ম্বনার কথা চিন্তা করে ,লাখপুর গ্রামের স্কুল শিক্ষক সিদ্দিক মাষ্টার তিন বছর আগে নরসুন্দা নদীতে প্রায় ৩’শ ফুট দীর্ঘ একটি বাঁশের সাঁেকা নির্মাণের উদ্যোগ নেন। গ্রামবাসী নিজেরা বাঁশ, টাকা ও শ্রম দিয়ে সাঁকোটি নির্মাণ করে। এতে হাসি ফোটে মানুষের মুখে। কিন্তু বর্তমানে সাঁকোটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় আবারও দুশ্চিন্তায় তারা। এলাকার জনপ্রতিনিধিদের কাছে ঘুরেও পাকা সেতু নির্মানে আশ্বাস ছাড়া মিলছেনা কিছুই। সিদ্দিক মাষ্টার জানান, এখানে একটি পাকা সেতুর জন্য আমরা দীর্ঘ ১৫ বচর ধরে চেষ্টা চালাচ্ছি। এলাকার এমপি-মন্ত্রীদের কাছে বার বার যাচ্ছি। কিন্তু কোন উপায় মিলছেনা।

সম্প্রতি আজিমের বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্কুলসময়ে শত শত শিক্ষার্থী জরাজীর্ণ সেতু পার হচ্ছে। দেহুন্দা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী তামান্না আক্তার জানায়, প্রতিদিন তারা ভয়ে ভয়ে বাঁশের সাঁকো পার হয়। জান্নাতুল ফেরদৌস মীম জানায়, সরকার আন্তরিক হলে নদীর উপরে একটি পাকা সেতু করতে অসুবিধা হওয়ার কথা না। কিন্তু আমাদের দুর্ভোগ দেখার যেন কেউ নেই। একই স্কুলের শিক্ষার্থী রাকিব আল হাসান, নাইম ও রেজওয়ান এখানে একটি পাকা সেতু নির্মাণের
দাবি জানিয়ে বলে, বর্ষাকালে কিংবা বৃষ্টির সময় জীবন বাজি রেখে সাঁকো পার হতে হয়। পা পিছলে পড়ে গেয়ে অনেকই আহত হয়েছে বিভিন্ন সময়। কিরাটন গ্রামের স্কুল
শিক্ষক সাইফুল ইসলাম ও আবুল কাশেম মাষ্টার বলেন, ‘ এলাকায় জরুরী অবস্থায় কাউকে হাসপাতালে নেয়ার দরকার হলে তখন কিছুই করার থাকেনা। ঢালার পাড় ও দিগদাইর এলাকায় হাজার হাজার মন সব্জি চাণ হয়। কিন্তু ব্রিজ না থাকায় পরিবহন করতে না পারায় জমির কাছে কম টাকায় সব্জি বিক্রি করতে হয়।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে করিমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবুল কাশেম শাহীন বলেন, ‘লাখপুর আজিমের বাজার ঝুঁকিপূর্ণ বাশেঁর সাঁকোটি এলাকার মানুষকে দুর্ভোগে ফেলেছে এটা শুনেছি। যত দ্রুত সম্ভব এখানে পাকা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। বিষয়টি দেখার জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলীতে বলা হয়েছে।

বাঁশের সাঁকো নয়, নরসুন্দায় অবিলম্বে নির্মাণ করা হবে পাকা সেতু, আরদুর্ভোগের কবল থেকে রেহাই পাবে শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ- এমন দিনের অপেক্ষায় এলাকাবাসী।



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই