তারিখ : ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

আর ক’টা দিন হাতে পেলেই স্বপ্ন পূরণ হত ফরিদ সফিকুলের

দুই খামারীর স্বপ্ন শেষ,শুধু চোখের জল মুছেন
আর ক’টা দিন হাতে পেলেই স্বপ্ন পূরণ হত ফরিদ সফিকুলের
[ভালুকা ডট কম : ২৬ এপ্রিল]
গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার উজিলাবো গ্রামের খামারী ফরিদ হোসেন ও তেলিহাটী ইউনিয়নের টেংরা গ্রামের সফিকুল ইসলাম মঙ্গলবারের কালবৈশাখী ঝড়ের পর থেকে এখন শুধু চোখের জল মুছেন। তারা এখন মৃত মুরগী নাড়িয়ে চাড়িয়ে প্রতিবেশীদের দেখান।

১১২ টাকা করে ১৬’শ মুরগী নিয়ে যাত্রা শেষ হয়নি:
গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার উজিলাবো গ্রামের খামারী ফরিদ হোসেন গত ছয় বছর যাবত মুরগী লালন পালনের সাথে যুক্ত। শুরুর দিকে পাঁচ’শ মুরগী দিয়ে মাটিতে শেড করে খামারের কার্যক্রম শুরু করেন। বছর দুয়েক পর উঁচু শেড তৈরী করে খামারের কাজ চালানো শুরু করেন। সারাদিনের পুরো সময় খামারেই ব্যায় করেন। যা আয় হয় তা দিয়ে স্ত্রী, সন্তান নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে কেটে যেতে থাকে ফরিদের সংসার।

কোনো ঋণ নয়, নিজের জমানো টাকা দিয়ে ১১২ টাকা করে প্রতিটি একদিনের মুরগীর বাচ্চা কিনেছিলেন ফরিদ হোসেন। এক হাজার ৬’শ লেয়ার মুরগীর বাচ্চা টানা ৬০ দিন লালন পালন করেন। গত শুক্রবার শেড থেকে মুরগীগুলো খাঁচায় তুলেন। মাত্র পাঁচ দিন পার হয়েছে।

আর দিন পনের পর ডিম পাড়ার কথা ছিল। লাভের মুখ দেখার স্বপ্ন দেখতেও শুরু করেছিলেন। কিন্তু বিধি বাম। এর আগেই মঙ্গলবার রাত আটটায় কালবৈশাখী ঝড় তার লেয়ার মুরগীর খাঁচার শেড ভেঙ্গে চুড়মার করে দেয়। মারা যায় এক হাজার মুরগী। এর সাথে তার স্বপ্নের আর কিছুই বাকী থাকেনি।

ফরিদ হোসেন জানান, ঝড়ের সময় ঘরের জানালা দিয়ে মুরগীর ছটফট আর এদিক সেদিক দৌড়াদৌড়ির দৃশ্য দেখেছেন আর আফসোস করেছেন। ঝড়শেষে এক হাজার ৬’শ মুরগী থেকে মাত্র ৬’শ মুরগী রক্ষা করতে পেরেছেন। সেগুলোর অবস্থাও নাজুক। সবশেষ তিন’শ উৎপাদনে যেতে পারে বলে ধারণা তার।

প্রতিবেশী আলমগীর হোসেন জানান, ঝড়ের পর থেকে মানসিকভাবে অনেকটাই ভেঙ্গে পড়েছেন ফরিদ হোসেন। যার সাথেই কথা বলেন, কথা বলথে বলতে লাল চোখে গড়িয়ে পড়া পানি মুছেন।

সফিকুলের সুখের যাত্রা থামিয়ে দিল কালবৈশাখী ঝড়:
শ্রীপুরের তেলিহাটী ইউনিয়নের টেংরা ইউনিয়ন পরিষদের পাশের বাসিন্দা সফিকুল ইসলাম জানান, দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে পড়াশুনা করাচ্ছেন। খেয়ে পড়ে সচ্ছল আর ১০টি পরিবারের মতোই কেটে যাচ্ছিল তার দিন। গত তিন বছর স্ত্রী সন্তান নিয়ে সুখের সংসার ছিল তার। মঙ্গলবারের কালবৈশাখী ঝড় তার সে সুখের যাত্রা থামিয়ে দিয়েছে।

হাত উঁচিয়ে মাটিতে মিশিয়ে দেয়া পোল্ট্রি খামারের দিকে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে কান্নাজড়িত কন্ঠে তিনি বলেন, তিন বছরে এমন ক্ষতি তার হয়নি। আড়াই হাজার কক মুরগী লালন পালন করে বড় করেছেন। বর্তমানে প্রতিটি মুরগীর পাইকারী বাজার মুল্য ৯০ টাকা। মঙ্গলবার রাতের ঝড় তার মুরগীর শেড ভেঙ্গে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে। ঘরের কোনো, বেড়ার নিচ থেকে দ’শ মুরগী জীবিত উদ্ধার করেছেন।চোখের জল মুছতে মুছতে বলেন আবার কিভাবে দাঁড়াবো জানিনা।

এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম বলেন, এলাকার লোকজনকে নিয়ে আমিও তার ক্ষয়ক্ষতি দেখতে গিয়েছিলাম। সদস্য বলেন, গত রাতের ঝড়ে প্রত্যেক বাড়ির ফলজ, বনজ গাছপালা, বেশ কয়েকটি বাড়ির টিনের চাল উবে গেছে। তার নিজেরও ৭০টি বনজ ও ফলজ গাছ ভেঙ্গে গেছে। তার ব্যাক্তিগত কমপক্ষে ১০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবী করেন। রান্না, গোয়াল ঘর সব উড়ে গেছে। গবাদী পশু এখন ঘরহীন হয়ে পড়েছে।

তিনি বলেন, টেংরা গ্রামের ব্যবসায়ী এনামুল হকসহ তার বাড়ি থেকে উত্তর পূর্ব দিকে কমপক্ষে দুই’শ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পাশর্^বর্তী উজিলাবো গ্রামের ভ্যানচালক আমির উদ্দিনের বসতঘরে গাছ পড়ে মাটির ঘর ধসে পড়েছে। টিনের চাল উড়িয়ে নিয়েছে শহর আলী, ফজলুল হক, রিক্সাচালক হাবিবুর রহমান, নজরুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম পুলিশ, ইকবাল হোসেন, মহিজ উদ্দিনের ঘরের।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

জীবন যাত্রা বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই