তারিখ : ১৯ মার্চ ২০২৪, মঙ্গলবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

রাণীনগরে কক্ষের অভাবে বারান্দায় পাঠদান

রাণীনগরে কক্ষের অভাবে পরিত্যক্ত মাটির কক্ষের বারান্দায় পাঠদান,চরম ভাবে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম
[ভালুকা ডট কম : ১০ মার্চ]
নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকার বিদ্যাপিঠ পারইল উচ্চ বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টিতে কক্ষ সংকটের কারণে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পরিত্যক্ত মাটির কক্ষ ও কক্ষের বারান্দায় গাদাগাদি করে পাঠগ্রহণ করছে শিক্ষার্থীরা।

পরিত্যক্ত মাটির এই ভবনগুলো যে কোন সময় ভেঙ্গে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহল। পর্যাপ্ত শ্রেণি কক্ষ না থাকার কারণে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরিত্যক্ত মাটির কক্ষে ও কক্ষের বারান্দায় পাঠদান করাতে বাধ্য হচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট বিভাগকে বার বার অবগত করেও কোন কাজ হয়নি বলে জানান শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আব্দুস সাত্তার জানান, উপজেলার একেবারেই একটি প্রত্যন্ত ও অবহেলিত অঞ্চল পারইল ইউনিয়ন পরিষদ। যার কারণে বিদ্যালয়ের প্রতি কারো সুদৃষ্টি পড়ে না। ১৯৬৫সালে এই অঞ্চলের ছেলে-মেয়েদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য তৎকালীন শিক্ষানুরাগী মরহুম মসলিম উদ্দিনসহ আরো ক’জন ব্যক্তিরা স্বেচ্ছায় এখানে ৩টি মাটির কক্ষ তৈরি করে শুরু করেন পাঠদান কার্যক্রম। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৩সালে স্থাপন করা হয় এই পারইল উচ্চ বিদ্যালয়। সেই সময় থেকে অবহেলিত এই অঞ্চলের মানুষের মাঝে প্রায় অর্ধশতাধিক বছর ধরে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে আসছে এই আদর্শ বিদ্যাপিঠটি। কিন্তু অনেক বছর পার হলেও এখনো এই বিদ্যাপিঠটিতে কোন প্রকারের আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি। বর্তমানে এই বিদ্যাপিঠ নানা সমস্যায় জর্জড়িত। সুন্দর ও মনোরম পরিবেশে শিক্ষা প্রদানের ক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে দাড়িয়েছে কক্ষ সংকট। কক্ষ সংকটের কারণে বাধ্য হয়ে পরিত্যক্ত মাটির কক্ষের বারান্দায় গাদাগাদি করে পাঠদান কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। বিদ্যালয়ে প্রতিদিন ৩শত ৫০জন শিক্ষার্থী পাঠ গ্রহন করছে। বিজ্ঞানাগার না থাকার কারণে লাখ লাখ টাকা মূল্যের বৈজ্ঞানিক উপকরন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। প্রধান শিক্ষক ও সাধারন শিক্ষকদের জন্য নেই আলাদা কক্ষ। প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত কক্ষে পাঠগ্রহণ করতে বাধ্য হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন বিদ্যালয় চলাকালে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা সবার অজানতেই ওই সব কক্ষে খেলাধুলা করে। যার কারণে যে কোন সময় মাটির কক্ষগুলো ভেঙ্গে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। ঝড়ে পরিত্যক্ত মাটির ভবনের টিনগুলো উড়ে যাওয়ায় বার বার বিপাকে পড়তে হয়।

বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী জাকিয়া সুলতানা, রাজিয়া পারভীনসহ অনেকেই জানায়, আমরা কক্ষের অভাবে পরিত্যক্ত মাটির কক্ষে ও কক্ষের বারান্দায় পাঠ গ্রহণ করছি। এছাড়াও বিদ্যালয়ে মেয়েদের জন্য নেই কমন ও ওয়াশ রুম, আধুনিক মানসম্মত বহুতল ভবন, নেই শেখ রাসেল কম্পিউটার ল্যাব ও গ্রন্থাগার। যার কারণে আমরা গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার্থীরা আধুনিকমানের শিক্ষার অনেক কিছু থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। আমরা সুন্দর ও মনোরম পরিবেশে পাঠ গ্রহণ করতে পারছি না।

বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো: জিল্লুর রহমান বলেন, আমরা অনেকবার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর এই সমস্যার কথা লিখিত ভাবে জানিয়েছি কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন ফল পাওয়া যায়নি। যদি এই পরিত্যক্ত ভবনগুলো ভেঙ্গে সম্প্রসারণ করে আধুনিক মানের ভবন নির্মাণ করা এবং শিক্ষার্থীদের জন্য সকল সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হয় তাহলে একটি সুন্দর পরিবেশে শিক্ষার্থীরা পাঠ গ্রহণ করতে পারবে। ফলে এই প্রত্যন্ত গ্রাম এলাকার মানুষের মাঝে সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠানার প্রতি আগ্রহ বাড়বে এবং ঝড়ে পড়া অনেক কমে যাবে ।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আল মামুন বলেন, এই বিদ্যালয়সহ আরো কয়েকটি বিদ্যালয়ের সমস্যা চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানানো হয়েছে। আশা রাখি এই সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য কর্তৃপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

শিক্ষাঙ্গন বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৬ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই