বিস্তারিত বিষয়
রাণীনগরে বাড়ির ছাদে বাণিজ্যিক ভাবে চাষ হচ্ছে ঘৃতকুমারী
রাণীনগরে বাড়ির ছাদে বাণিজ্যিক ভাবে চাষ হচ্ছে ঘৃতকুমারী,আর্থিক ভাবে স্বালম্বী হচ্ছে গৃহবধূরা
[ভালুকা ডট কম : ১৫ ফেব্রুয়ারী]
নওগাঁর রাণীনগরে বাড়ির ছাদে বাগান তৈরি করে বাণিজ্যিক ভাবে চাষ হচ্ছে অ্যালোভেরার (ঘৃতকুমারী)। ঔষুধী গুনসম্পন্ন এই ফসল চাষ করে আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন উপজেলার মাধাইমুড়ী মহিলা সিআইজি দলের (কমোন ইন্টারেস্ট গ্রুপ) সদস্য হোসনে আরা। হোসনে আরার দেখাদেখি বর্তমানে ওই গ্রামের প্রায় ১০জন মহিলা তাদের নিজ নিজ বাড়ির ছাদকে আবার কেউ কেউ বাড়ির উঠানের পরিত্যক্ত জমিতে এই ফসল চাষ করে বাড়তি অর্থ আয় করছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা, সুপরিচিত ঔষুধী গুন সম্পন্ন একটি গাছ হচ্ছে অ্যালোভেরা (ঘৃতকুমারী)। এই গাছের পুরো অংশটিই ঔষুধী হিসেবে বহুল ব্যবহার করা হয়। বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে শরীর ঠান্ডা রাখতে সরবতের সঙ্গে প্রচুর এই অ্যালোভেরা (ঘৃতকুমারী) খাওয়া হয়। এছাড়াও বর্তমানে রূপচর্চাতেও এই ঔষুধী গাছটি ব্যবহার করা হচ্ছে। এই গাছটির ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় এর চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের মধ্যে যশোর জেলা অ্যালোভেরা (ঘৃতকুমারী) চাষের জন্য বিখ্যাত ছিলো। কিন্তু বর্তমানে রাণীনগর উপজেলার কালীগ্রাম ইউনিয়নের মাধাইমুড়ি গ্রামে প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিক ভাবে অ্যালোভেরার (ঘৃতকুমারী) চাষ শুরু করেছেন ওই গ্রামের কৃষি ভিত্তিক সিআইজি (কমোন ইন্টারেস্ট গ্রুপ) দলের মহিলারা। আর তাদেরকে এই লাভজনক আবাদ চাষে আগ্রহী করে তুলেছেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতায় ওই গ্রামে প্রথমে হোসনে আরা এই চাষ শুরু করেন। আর তার দেখাদেখি বর্তমানে প্রায় ১০জন মহিলা তাদের বাড়ি ছাদে ও পরিত্যক্ত জায়গায় অ্যালোভেরার (ঘৃতকুমারী) চাষ শুরু করেছেন। এছাড়াও মহিলাদের পাশাপাশি পুরুষরাও জমিতে পরীক্ষামূলক ভাবে অ্যালোভেরার (ঘৃতকুমারী) চাষ শুরু করেছেন। কম পরিশ্রম ও কম খরচে লাভ বেশি হওয়ায় অ্যালোভেরা (ঘৃতকুমারী) চাষের দিকে ঝুঁকছেন ওই গ্রামের অনেক মহিলা ও পুরুষরা।
গৃহিনী হোসনে আরা বলেন বর্তমানে মাধাইমুড়ি গ্রামটি ঘৃতকুমারী গ্রাম নামে পরিচিতি পেয়েছে। তিনি প্রথমে শখের বসে বাড়ির ছাদে একটি-দুটি টবে ঘৃতকুমারীর গাছ রোপন করেন। এরপর নিজেদের প্রয়োজনে সেখান থেকে ঘৃতকুমারী ব্যবহার করতেন। বিশেষ করে গরমের সময় সরবতে এই ঔষুধী গাছের ব্যবহার বেড়ে যায় বহুগুনে। খুব সহজে ও কম পরিশ্রমে এই ফসলের চাষ করা সম্ভব। এরপর কৃষি অফিসের পরামর্শে তিনি বাণিজ্যিক ভাবে এই গাছের চাষ শুরু করেন। তিনি বর্তমানে বাড়ির ছাদের আর কোন জায়গা অবশিষ্ট রাখেননি। যেখানেই একটু জায়গা পেয়েছেন সেখানেই তিনি ঘৃতকুমারীর চারা রোপন করেছেন। সারাবছরই এই গাছ থেকে ফলন পাওয়া যায়। মূলত এই গাছের পাতার মোটা অংশের ভিতরের মাংসগুলো ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে পাইকার ব্যবসায়ীরা এসে তার ছাদ বাগান থেকে ঘৃতকুমারী কিনে নিয়ে যায়। তাই এটি বিক্রির জন্য আলাদা ভাবে চিন্তা করতে হয় না।
তিনি আরো বলেন বর্তমানে তার এই অ্যালোভেরার (ঘৃতকুমারী) ছাদবাগান থেকে তিনি প্রতি মাসে ১০-১২হাজার টাকার ঘৃতকুমারী বিক্রয় করেন। নিজের পরিবারের কাজ শেষ করে তিনি তার ঘৃতকুমারীর বাগানে পরিচর্যা করেন। উপজেলা কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতা পাওয়ায় তার এই এতো বড় ঘৃতকুমারীর বাগান তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। এছাড়াও গ্রামের অন্য মহিলাদের এই লাভজনক বাগান তৈরি করতেও তিনি উদ্ধুদ্ধ করে আসছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহীদুল ইসলাম বলেন আমরা উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে কৃষিভিত্তিক সিআইজি দলের মাধ্যমে গ্রামীণ মহিলাদের আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী ও বিষমুক্ত সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করে আসছি। তারই ধারাবাহিকতায় মাধাইমুড়ি গ্রামে মহিলাদের মাধ্যমে এই প্রথম বাণিজ্যিক ভাবে অ্যালোভেরার (ঘৃতকুমারী) চাষ শুরু করা হয়েছে। আর এই অ্যালোভেরার (ঘৃতকুমারী) চাষে দৃষ্টান্তর স্থাপন করেছেন হোসনে আরা। এই গাছের রোগবালাই খুব কম। শুধুমাত্র পাতাতে পচন রোগ দেখা দিলে চুন ও তুঁতের বৌদ্ধ মিশ্রন প্রয়োগ করলেই যথেষ্ট। এছাড়া তেমন কোন বড় ধরনের রোগ হয় না। এই গাছের চারা সহজলভ্য, পরিশ্রম ও খরচ খুবই কম হয়। এতে করে লাভের পরিমাণ খুবই বেশি। আর এই গাছের চাহিদা অনেক বেশি হওয়ায় বাজারজাত করা নিয়ে তেমন ভাবতে হয় না। পাইকাররা এসে বাড়ি থেকে এগুলো নিয়ে যায়।
তিনি আরো বলেন বর্তমানে এই গ্রামের মহিলারা পরিবারের কাজের ফাঁকে ঘৃতকুমারীর বাগান তৈরির দিকে ঝুঁকছেন। আমরা তাদেরকে সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে আসছি। আশা রাখছি আর অল্প কিছুদিনের মধ্যে মাধাইমুড়ির পুরো গ্রামে ঘৃতকুমারীর চাষ ছড়িয়ে পড়বে। শুধু এই গ্রামেই নয় আমরাও চেষ্টা করবো উপজেলার অন্যান্য গ্রামেও এই চাষ ছড়িয়ে দেওয়ার। যাতে করে গ্রামীণ মহিলারা অযথা সময় নষ্ট না করে সংসারের কাজের ফাঁকে ঘৃতকুমারীর এই বাগানের মাধ্যমে আর্থিক ভাবে লাভবান হন সেই প্রত্যয় নিয়েই আমরা মাঠে কাজ করে যাচ্ছি।#
সতর্কীকরণ
সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।
কমেন্ট
কৃষি/শিল্প বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
- রাণীনগরে চলছে কৃষি জমিতে পুকুর খনন [ প্রকাশকাল : ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ০৮.০০ অপরাহ্ন]
- তজুমদ্দিনে ধানের চারা রোপন কাজের উদ্বোধন [ প্রকাশকাল : ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ০২.০০ অপরাহ্ন]
- যন্ত্রে ধানগাছ রোপণ করছে রাণীনগরের কৃষক [ প্রকাশকাল : ২৬ জানুয়ারী ২০২৪ ০৪.০০ অপরাহ্ন]
- কালিয়াকৈরে মাছ চাষে ফিশারিজের সফলতা [ প্রকাশকাল : ০৯ জানুয়ারী ২০২৪ ০২.০০ অপরাহ্ন]
- রাণীনগরে ভর্তুকিতে কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণ [ প্রকাশকাল : ০২ জানুয়ারী ২০২৪ ০৩.০০ অপরাহ্ন]
- রাণীনগরে বিনামূল্যে সবজির বীজ বিতরণ [ প্রকাশকাল : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ০১.০০ অপরাহ্ন]
- রাণীনগরে কৃষক মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত [ প্রকাশকাল : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ০১.০০ অপরাহ্ন]
- নওগাঁর মাঠে শোভা পাচ্ছে সরিষার হলুদ ফুল [ প্রকাশকাল : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৭.৩১ অপরাহ্ন]
- রাণীনগরে কৃষক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত [ প্রকাশকাল : ২২ নভেম্বর ২০২৩ ০১.৩০ অপরাহ্ন]
- নান্দাইলে নগদ অর্থ ও উপকরণ বিতরণ [ প্রকাশকাল : ২০ নভেম্বর ২০২৩ ০২.০০ অপরাহ্ন]
- রাণীনগরে জি-৯ কলা চাষে সাড়া ফেলেছে সুফলা [ প্রকাশকাল : ১৯ নভেম্বর ২০২৩ ০৪.০০ অপরাহ্ন]
- রাণীনগরে কৃষি প্রণোদনার বীজ-সার বিতরণ [ প্রকাশকাল : ০৫ নভেম্বর ২০২৩ ০২.০০ অপরাহ্ন]
- কালিয়াকৈরে গার্মেন্টস শ্রমিকদের বিক্ষোভ [ প্রকাশকাল : ২৩ অক্টোবর ২০২৩ ০১.৪৪ অপরাহ্ন]
- শার্শায় কৃষকদের মাঝে বীজ ও সার বিতরন [ প্রকাশকাল : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০১.১০ অপরাহ্ন]
- রায়গঞ্জে মৌসুমের চেয়ে ধানের দাম কম [ প্রকাশকাল : ২৫ জুলাই ২০২৩ ০৩.০০ অপরাহ্ন]