তারিখ : ১৯ মার্চ ২০২৪, মঙ্গলবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

আগুনে পোড়া ও করণীয়

আগুনে পোড়া ও করণীয়
[ভালুকা ডট কম : ৩০ নভেম্বর]
আমাদের দেশে সারাবছরই কমবেশি অগ্নিকান্ডের মতো দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। এতে জানমালের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়। তবে শীতকালে সবকিছু শুষ্ক থাকায় এটি বেশি হয়। আগুন, গরম পানি, তেল, বিদ্যুৎ, অ্যাসিড ও বিস্ফোরণের দ্বারা শরীর পুড়ে যায়। দ্রুত ও সঠিক চিকিৎসা না করার কারনে এতে মৃত্যু ও পঙ্গু বা বিকলাঙ্গতা অনেক বেশি হয়।

পোড়া সাধারণত দুইপ্রকার (ক) আগুনে পোড়া বা বার্ণ।(খ) গরম তরলে পোড়া বা স্ক্যাল্ড।আবার গভীরতার উপর ভিত্তি করে আগুনে পোড়া ক্ষতকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়।

প্রথম মাত্রার (মৃদু/হালকা) পোড়া : ত্বকের উপরিস্তর ক্ষতিগ্রস্ত হয়, লাল হয়ে ফোলে যায় ও জ্বলে। আগুনের পাশে, আগুনের আঁচ থেকে এ মাত্রার ক্ষত হয়।

দ্বিতীয় মাত্রার (মধ্যম/মাঝারি) পোড়া : ত্বকের উপরিস্তর সম্পূর্ণ এবং নিচের আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পোড়া স্থান লাল হয়ে ফোলে যায়, ফোসকা পড়ে ও প্রচণ্ড ব্যথা হয়। গরম পানি, গরম তরল ও জ্বলন্ত কাপড়ের আগুনে এ ধরনের ক্ষত হয়।

তৃতীয় মাত্রার (তীব্র/মারাত্মক) পোড়া : ত্বকের প্রথম দুটি স্তরই সম্পূর্ণ এবং গভীর মাংসপেশি, রক্তনালি, স্নায়ু ইত্যাদিতে ক্ষত হয়। আক্রান্ত স্থান কালো, শক্ত ও ব্যথা হয়। আগুনের শিখা, বিদ্যুৎ, ফুটন্ত পানি বা তরল ও বোমা বিস্ফোরণে এ ধরনের ক্ষত হয়।

চিকিৎসা:
আগুনে পুড়লে আতংকিত হয়ে ছুটাছুটি না করা। শুয়ে মাটিতে গড়াগড়ি করা। নাক চেপে দ্রুত দুর্ঘটনার স্থান ত্যাগ করা। ক্ষত স্থানে গোবর, দুধ, বরফ, তুলা, টুথপেস্ট, ডিম, দূর্বাঘাস ইত্যাদি না দেওয়া। এতে ধনুষ্টংকার ও ইনফেকশন হয়ে রুগী মারা যায়। প্রথম মাত্রার পোড়ায় ১০-১৫ মিনিট পানি ঢালা। এছাড়া আর তেমন কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন নেই। দ্বিতীয় মাত্রা পোড়ায় ৩০ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা পর্যন্ত পানি ঢালা। ফোসকা না গলানো। প্রাথমিক চিকিৎসার পর রুগী হাসপাতালে নেওয়া উচিত। তৃতীয় মাত্রার পোড়ায় দ্রুত রুগী আগুন থেকে সরিয়ে কাপড় খুলে ঠান্ডা পানি ঢালা। পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা। পানি, শরবত, স্যালাইন বা ডাবের পানি পান করানো ও যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে স্থানান্তর জরুরী।

প্রতিকারঃ
অগ্নি দুর্ঘটনার চিকিৎসা অপেক্ষা প্রতিকার অনেক সহজ। তাই প্রতিকারে আমাদের আরো বেশি মনযোগী হওয়া জরুরী। চুলা, ম্যাচবক্স, বৈদ্যুতিক লাইন নিরাপদ রাখা। নতুন নিরাপদ গ্যাস সিলিন্ডার এবং চুলা ব্যবহার। ধূমপান পরিহার করা। ঘুমানোর আগে গ্যাস ও বৈদ্যুতিক চুলা নিভানো আছে কিনা দেখে নেয়া। রান্না শেষে চুলা নিভিয়ে ঢেকে রাখা। বিজ্ঞানসম্মতভাবে তৈরী নিরাপদ চুলা ব্যবহার করা। জলন্ত ছাই কয়লা নিভিয়ে বাইরে যথাস্থানে ফেলুন। গরম পানি, গরম খাবার ও রাসায়নিক দ্রব্য শিশুদের নাগালের বাইরে রাখা। অফিস, কলকারখানা ও বাসাবাড়িতে আগুন নিভানোর জন্য অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র (এক্সটিংগুইশার) রাখুন। প্রত্যেকেই অগ্নি নির্বাপন প্রশিক্ষণ নেয়া। বিদ্যুৎ অফিস ও ফায়ার সার্ভিসের ফোন নম্বর সংগ্রহে রাখা। আশেপাশে পর্যাপ্ত জলাধারের ব্যবস্থা রাখা। আমরা সচেতন হলে অগ্নি দুর্ঘটনা অনেকাংশেই হ্রাস পাবে। সবশেষে সৃষ্টিকর্তা আমাদের জানমাল নিরাপদ রাখুন। #



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

স্বাস্থ্য বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৬ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই