তারিখ : ১৯ মে ২০২৪, রবিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

ভালুকায় মোহাম্মদীয়া হাসপাতালে নবজাতকের মৃত্যু

ভালুকায় মোহাম্মদীয়া হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ
[ভালুকা ডট কম : ০৫ মে]
ভালুকায় মোহাম্মদীয়া মডেল হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় ফাতেমা (দুইদিন) নামে এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

জানা যায়, গত মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে ভালুকা পৌরসভার ১নম্বর ওয়ার্ডের আইনাল হকের অন্তসত্তা স্ত্রী রিতু আক্তারের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের মহাসড়ক সংলগ্ন সালাহ উদ্দিন প্লাজায় অবস্থিত মোহাম্মদীয়া মডেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন। ওই হাসপাতালের মালিকের স্ত্রী গাইনি ডাক্তার রোকেয়া আক্তার রিতুকে দেখে অনাগত সন্তান ও মায়ের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা বলে ওই রাতেই ৩০ হাজার টাকা চুক্তিতে দ্রুত সিজারিয়ান অপারেশনের পরামর্শ দেন। গর্ভবতী মায়ের সন্তান প্রসবের একমাস পূর্বেই সিজারিয়ান অপারেশনের চুক্তি করে ওই দিন রাতে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অজ্ঞানের চিকিৎসক ডা. সুলতান ফজলে রাব্বী (নাহিদ) রোগীকে অজ্ঞান করেন এবং ডা. রোকাইয়া আক্তার সিজারিয়ান অপারেশন করেন। সন্তান প্রসবের পর শিশু চিকিৎসক ডা. শরমিলা আক্তার নবজাতকের সমস্যার কথা বলে তড়িগড়ি করে ময়মনসিংহের চুরখাই কমিউনিটি বেস্ট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতলে প্রেরণ করেন। ওই হাসপাতালে ভর্তি করার পর বৃহস্পতিবার (২ মে) বিকালে নবজাতক মারা যায়। এ ঘটনার পর স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীগণ মোহাম্মদীয়া মডেল হাসপাতালে ওই রোগি তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

নিহত নবজাতকের নানী নারগীস আক্তার জানান, মোহাম্মদীয়া হাসপাতালে তার মেয়ে রিতুকে ৩০ হাজার টাকায় সিজারিয়ান অপারেশন করা হলেও ডাক্তারের অবহেলায় তার নবজাতক নাতি ফাতেমা মারা গেছে।
প্রতিবেশি তাইজউদ্দিন জানান, তিনি খবর পেয়ে মোহাম্মদীয়া হাসপাতালে যান। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিনি নবজাতককে চুরখাই হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। দুইদিন ওই হাসপাতালে রাখার পর ময়মনসিংহ নেক্সাস হাসপাতালে রেফার করলে, সেখানে নেয়ার পথে নবজাতক মারা যায়।

অজ্ঞানের চিকিৎক ডা. সুলতান ফজলে রাব্বী (নাহিদ) জানান, মঙ্গলবার তিনি ওই প্রসুতি মাকে সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য অজ্ঞান করেছিলেন এবং ডাক্তার রোকেয়া সিজারিয়ান অপারেশন করেন। নবজাতক মারা গেছে কি না তা তার জানা নেই।        

এ ব্যাপারে জানার জন্য ডা. রোকাইয়া আক্তারের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন দিলেও রিসিফ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। ডা. রোকাইয়া আক্তারের স্বামী ও মোহাম্মদীয়া মডেল হাসপাতালের পরিচালক আব্দুল রাজ্জাক জানান, গত মঙ্গলবার তার হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশন করার পর নবজাতকের শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে ডা. শরমিলা আক্তার শিশুটির চিকিৎসা দেন। কিন্তু উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে চুরখাই কমিউনিটি বেস্ট মেডিক্যাল কলেজ প্রেরণ করা হয় এবং সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাচ্চাটি মারা গেছে।

ভালুকা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ হাসানুল হোসেন জানান, মোহাম্মদীয়া হাসপাতাল থেকে একটি নবজাতককে চুরখাই হাসপাতালে পাঠানোর পর ওই শিশুটি মারা যাওয়ার কথা তিনি শুনেছেন, অভিযোগ পেলে খোঁজ নিয়ে ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ময়মনসিংহের সিভিল সার্জন ডা. নজরুল ইসলাম জানান, তাকে ওই বিষয়টির ব্যাপারে কেউ অবগত করেনি। প্রসবের নির্ধারিত সময়ের আগে সিজারিয়ান অপারেশন করা হলে, শিশুর স্বাস্থ্য ঝুঁকি থাকতে পারে। খোঁজ নিয়ে বিধিগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, গত ৯ জানুয়ারী সন্ধ্যায় গফরগাঁও উপজেলার ছয়ানি রসুলপুর গ্রামের সিঙ্গাপূর প্রবাসী নাজমুল হকের স্ত্রী ববিতাকে মোহাম্মদীয় মডেল হাসপাতালের ডা. রোকাইয়া আক্তার সিজারিয়ান অপারেশন করেন। দ্বিতীয় বারের মতো মেয়ে সন্তান জন্ম হয়। অপারেশনের পর রোগীর অবস্থা খারাপ হয়ে গেলে ববিতার পরিবারের লোকজনকে ডেকে এনে বলা হয়। জরুরী ভিত্তিতে ববিতাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (মচিমহা) নিয়ে যেতে হবে বলে তড়িগড়ি করে ভাড়া করা একটি অ্যাম্বোলেন্সে উঠিয়ে দেন। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়াও গফরগাঁও উপজেলার দীঘা গ্রামের জাকারিয়ার স্ত্রী নাজনীনকে (২৫) গত ২৮মার্চ/২৩ইং মোহাম্মদীয়া হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের পর প্রসূতির শারীরিক সমস্য দেখা দিলে ৩ এপ্রিল ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ৬ দিন চিকিৎসা নেয়। নাজনীনের মা মোহাম্মদীয়া হাসপাতালে বুয়ার কাজ করতো। চিকিৎসার ক্ষতিপূরণ চাওয়ার নাজনীনের মা নাজমা আক্তারকে চাকুরিচ্যুত করা হয়।

তাছাড়া উপজেলার পানিহাদি গ্রামের সিঙ্গাপুর প্রবাসি মনসুর আলীর স্ত্রী শারমিন আক্তারকে ২ ফেব্রুয়ারী ২০২০ সকালে প্রসব ব্যাথা উঠলে তাকে একই হাসপাতালে ডা. রোকাইয়ার মাধ্যমে সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়। পরে শারমিন আক্তারের শারীরিক অবস্থা খারাপের দিকে গেলে তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। চিকিৎসাধিন অবস্থায় ১১ ফেব্রুয়ারী রাতে  শারমিন মারা যান। ১৯ এপ্রিল ২০২২ সালে ভুল চিকিৎসায় রাবেয়া আক্তার রেভা (২০) নামে এক গর্ভবতী মায়ের বাচ্চা নষ্ট হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। অপরদিকে ত্রিশাল উপজেলার কাঠাল বিল বোকাপাড়ার আতাউল হকের স্ত্রী ভালুকা উপজেলার মাস্টারবাড়ি স্কয়ার ফ্যাশনের শ্রমিক তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা ইসরাত জাহানের পেটে ব্যাথা উঠলে ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২০ দুপুরে হাসপাতালে নিয়ে আসলে ডিএনসি করার পর ২২ ফ্রেব্রুয়ারী তিনি মারা যান।#






সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

ভালুকা বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই