তারিখ : ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

নওগাঁয় বৃদ্ধি পাচ্ছে মিথ্যে মামলার সংখ্যা

নওগাঁয় বৃদ্ধি পাচ্ছে মিথ্যে মামলা ও অভিযোগে হয়রানীর সংখ্যা, নিরাপত্তাহীনতায় ভুক্তভোগী পরিবারগুলো
[ভালুকা ডট কম : ২৯ নভেম্বর]
নওগাঁর রাণীনগরে বৃদ্ধি পাচ্ছে মিথ্যে অভিযোগে হয়রানী ও মামলার শিকার হওয়া ভুক্তভোগীদের সংখ্যা। এতে করে চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিনানিপাত করতে হচ্ছে ওই সব পরিবারের সদস্যদের। প্রকৃত অপরাধে অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তি নিশ্চিত করার দাবী জানিয়েছে উপজেলার সচেতন মহল। তা নাহলে আইনের প্রতি সাধারন মানুষদের শ্রদ্ধা হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকেই।

হয়রানীর শিকার হওয়া উপজেলার কাশিমপুর গ্রামের খোদাবক্স সরদারের ছেলে সাদেকুল ইসলাম বলেন প্রয়াত সাংসদ ইসরাফিল আলম ৭বছর আগে কাশিমপুর রাজবাড়ির খাস জায়গাসহ আশেপাশের সাধারন মানুষদের ফসলী জমি জোরপূর্বক দখল করে গড়ে তোলেন পল্লীশ্রী সমন্বিত কৃষি প্রদর্শনী খামার। সেই সময় আমরা জমি হারানো অসহায় মানুষরা ইসরাফিলের ক্ষমতার কাছে অসহায় ছিলাম। ছিল প্রশাসনও নিরব। প্রতিবাদ করতে গেলেই প্রয়াত এমপি ভয়ভীতি দেখাতো। কিন্তু গত বছর ইসরাফিল আলমের মৃত্যুর পর জমি হারানো সাধারন মানুষরা তাদের জমিগুলো ফেরত পাওয়ার আশায় প্রতিবাদ করা শুরু করে। আমিও একজন ভুক্তভোগী হিসেবে সেই মানুষদের সহায়তা প্রদান করেছি এবং এখনও করছি। এটাই আমার অপরাধ।

আর এই প্রতিবাদের কারণে চলতি মাসের ২৪তারিখ রাত অনুমান আড়াইটার দিকে আমার বাড়িতে পুলিশের কিছু সদস্যরা এসে আমাকে ফিল্মি স্টাইলে থানার ওসির সঙ্গে দেখা করার কথা বলে কাশিমপুর মোড়ে নিয়ে আসে। শীতের মধ্যে তারা আমাকে শীতের কাপড় শরীরে জড়ানোর সময়টুকুও দেয়নি তারা। এরপর ওসির সঙ্গে দেখা হলে তিনি বলেন আমার সঙ্গে থানায় চল। এসময় পুলিশ একই গ্রামের সুরত আলীর ছেলে মোতাহার হোসেন বাচ্চুকেও নিয়ে আসে। আমাদের দুজনকেই ওসি থানায় এনে সোজা লকারে ঢুকিয়ে দেয়। এসময় আমাদের অপরাধ সম্পর্কে জানতে চাইলে ওসি আমাদেরকে কিছুই বলেন না। এরপর ওইদিন সকালে সাবেক সাংসদ ইসরাফিল আলমের স্ত্রী সুলতানা পারভীন খামার অবৈধ ভাবে দখলের এজাহার দাখিল করলে ওই দিন দুপুরে আমাদেরকে জেল হাজতে পাঠায়। অথচ থানার ওসি এজাহার দায়েরের আগেই আমাদেরকে গ্রেফতার করে আনেন। এরপর আমরা কয়েকদিন পর জামিন নিয়ে জেল থেকে বের হয়ে আসি। কিন্তু বিভিন্ন মহল থেকে এখনোও আমাকে ও বাচ্চুকে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। এতে করে আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি।

আরেকজন ভুক্তভোগী উপজেলার আতাইকুলা গ্রামের আব্দুল আলিমের ছেলে আতিকুর রহমান। তিনি বলেন আমি আতাইকুলা মাঠে মিলন হোসেনের কাছ থেকে সম্প্রতি ২৬শতাংশ জমি ক্রয় করি। যদিও ওই জমি ইয়ারুলের কাছে ইট ভাটার খলিয়ান হিসেবে লিজ দিয়েছিলো জমির মালিক মিলন। তারপরও আমি জমি ক্রয় করি শুধুমাত্র জমির মালিক মিলন ইয়ারুলের সাথে মধ্যস্থতা করে দেওয়ার কারণে। কিন্তু জমি কেনার পর পরবর্তীতে ইয়ারুলকে জমির লিজের টাকা আমাকে দেওয়ার কথা বললে ইয়ারুল তা দিতে অস্বীকার করে। উপায় না পেয়ে আমি আমার ক্রয়কৃত জায়গায় চলতি মাসের ১৩তারিখে গাছের চারা রোপন করি। কিন্তু কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই ১৪নভেম্বর বিকেলে পুলিশের কিছু সদস্যরা এসে আমাকে ওসির সঙ্গে দেখা করার কথা বলে থানায় নিয়ে আসে। এরপর জানতে পারি যে আমি নাকি ইয়াদুলের ইটভাটায় গিয়ে বিভিন্ন সময় তার কাছে ৫লাখ টাকা চাদাদাবী করেছি। এই মিথ্যে অভিযোগে ইয়াদুলের জামাই একই গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে তছলিম আমার বিরুদ্ধে চাদাবাজির মামলা দায়ের করেছে। সেই মামলার প্রেক্ষিতে ১৫নভেম্বর আমাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়। শুধু আমার বিরুদ্ধেই নয় নির্বাচনের প্রতিহিংসাসহ শত্রুতামূলক একই গ্রামের ভ্যানচালক মনোয়ার ও ময়েনকে, বিবিএস পড়ুয়া শিবলু ও আমার বাবা আব্দুল আলীমকেও মামলার আসামী করা হয়েছে। এতে করে আমিসহ চরম দিশেহারা হয়ে পড়েছে ওই সব দিনমজুর পরিবারগুলো।

কিন্তু ইয়াদুলই পেশীবলের জোরে একই গ্রামের মোসলেম হোসেনের ১৭শতাংশ ফসলী জমিসহ সাধারন মানুষদের জিম্মি করে ভাটার খলিয়ান তৈরির কথা বলে জমি লিজ নেয়। এরপর শর্ত ভঙ্গ করে জমিগুলো জোরপূর্বক খনন করে মাটি দিয়ে ইট আর পুকুর তৈরি করছে। এতে করে ভবিষ্যতে ওই ফসলী জমিগুলো আর কোন কাজেই আসবে না। তাই জমির মালিকগুলো দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এছাড়াও ভাটার খলিয়ানের পাশে এক কৃষকের জমিতে বিদ্যুতের পোল তৈরি করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে জিম্মি করে ইয়াদুল গোপনে প্রায় ৫লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছে। অথচ জমির ক্ষতিপূরন বাবদ ওই টাকা জমির মালিকের পাওয়ার কথা ছিলো। বছরের পর বছর ইয়াদুল এই রকম শত শত অবৈধ কর্মকান্ড এলাকায় চালিয়ে আসলেও প্রশাসন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করে না। পরবর্তিতে আমি চলতি মাসের ২২তারিখে জামিন নিয়ে জেল থেকে বের হয়ে আসি। এরপরও আমাকে বিভিন্ন মহল থেকে প্রতিনিয়তই বিভিন্ন রকমের হুমকি-ধামকী দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে আমি ও আমার পরিবারসহ মামলার অন্য আসামীরা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছি। সঠিক বিচার ও নিরাপত্তা চাইবো কার কাছে? অর্থের কাছে অনেকেই অন্ধ।

রাণীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিন আকন্দ বলেন থানায় মামলার প্রেক্ষিতে আমি আসামী গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসছি। এতে মানুষকে হয়রানী করার কোন বিষয় নেই। যে কেউ এসে থানার আশ্রয় নিতে পারেন। কেউ থানায় মামলা করলে আমরা সেই বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে আসামী গ্রেফতার করি।#






সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই